শৌচাগারের ইট ভেঙে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা। নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমকে ভোট দিয়েছেন, এমন সন্দেহে এক ব্যক্তির সরকারি প্রকল্পে শৌচাগার তৈরির ইট তাঁর বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের অন্তর্গত ওই এলাকায় মঙ্গলবারই ভোট হয়েছে।
বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে থানারপাড়ার ধোড়াদহ গ্রামের ১৩ নম্বর বুথে। ওই গ্রামের ভাদু শেখ জানান, তাঁর বাড়িতে শৌচাগার নেই। পঞ্চায়েতে আবেদন করে সম্প্রতি শৌচাগারের অনুমোদন পেয়েছেন। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত থেকে জানানো হয়েছিল যে প্রথমে নিজের খরচে শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু করতে হবে। তার পর প্রথম কিস্তির পাঁচ হাজার টাকা এবং কাজ সম্পন্ন হলে পরের সাত হাজার টাকা পাওয়া যাবে।”
ভাদু জানান, সেই মতো গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যের ব্যবস্থাপনায় ঠিকাদারের মাধ্যমে তাঁর বাড়িতে ছ’শো ইট সরবরাহ করা হয়। তা দিয়েই কাজ শুরু করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “এ দিন হঠাৎ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য রাজ্জাক শেখ আমার বাড়িতে এসে জানতে চান, কেন আমি সিপিএমকে ভোট দিয়েছি। তার পর জোর করে সমস্ত ইট তুলে নিয়ে চলে যান। বেশ কিছু ইট গাঁথা হয়েছিল, সেগুলিও ভেঙে নিয়ে গিয়েছেন।”
স্থানীয় সিপিএম নেতাদেরও ভাদু ঘটনাটি জানিয়েছেন। দলের করিমপুর ২ এরিয়া কমিটির সম্পাদক লিয়াকত হোসেন বলেন, “দিনমজুরি করে ভাদু শেখের সংসার চলে। ও আমাদের দলকে ভোট দিয়েছে কি না, তারও কোনও নিশ্চয়তা নেই। অন্য দলকে কেউ ভোট দিলেও পঞ্চায়েত সদস্য এই আইনবিরুদ্ধ কাজ করতে পারেন না। এ দিন ছুটি ছিল, বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতে গিয়ে অভিযোগ জানাব।”
তবে ভাদুর অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়ে পঞ্চায়েত সদস্য রাজ্জাক শেখ দাবি করেন, "আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওকে ৬০০ ইট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। পঞ্চায়েত থেকে টাকা পেলে দাম মেটাবে বলেছিল। কিন্তু এখন বলছে, সেই টাকা আর দেবে না। বাধ্য হয়ে ওর বাড়ি থেকে ইট তুলে নিয়ে ঠিকাদারকে ফিরিয়ে দিয়েছি। এর সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই।" ধোড়াদহ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অহীন্দ্র বিশ্বাস বলেন, "প্রত্যেককেই নিজের টাকা খরচ করে শৌচাগারের কাজ শুরু করতে হয়। কী কারণে ইট তুলে আনা হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব।”