রাস্তায় বোমার দাগ। নিজস্ব চিত্র
পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতির নতুন ভরকেন্দ্র ভূপতিনগর। এখানের বরজ এবং অর্জুননগরকে অতি স্পর্শকাতর এলাকা হিসাবে চিহ্নিত। বৃহস্পতিবার একই এলাকায় ভোটের প্রচারে ছিলেন কাঁথির দুই প্রার্থী। এ দিন নির্বিঘ্নে ভোট প্রচার সারেন তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিক। তবে তালকাটে বিজেপির সৌমেন্দু অধিকারীর কর্মসূচি ঘিরে। অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থীকে কালো পতাকা দেখানো, রোড শো লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়েছে। পরে, তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে।
আগামী ২৫ মে তমলুক এবং কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। চলছে জোর প্রচার। এ দিন সকালে বরজ এবং অর্জুননগরে দুটি সভা করেন তৃণমূল প্রার্থী উত্তম। ওই সময়ে অর্জুন নগরে রোড শো ছিল সৌমেন্দুর। এলাকার নন্দীচক সেতুর কাছ থেকে তিনি রোড শো-তে অংশ নেন। বিজেপি প্রার্থী, স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি একটি হুড খোলা গাড়ি চেপে এগোন। স্থানীয় সূত্রের খবর, অর্জুননগর পঞ্চায়েত অফিস ছাড়িয়ে খাল পাড়ের পাকা রাস্তা ধরে সৌমেন্দুর রোড শো এগোয়। কোথাও মহিলারা পুষ্প বৃষ্টি করেন। অর্জুন নগরে তৃণমূলের অঞ্চল কার্যালয়ের সামনে পথসভা করেন সৌমেন্দু। সেখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘চোর’ স্লোগান দেন বিজেপি কর্মীরা। এর পরে ১০ কিলোমিটার পেরিয়ে সৌমেন্দুর রোড-শো পটাশপুর বিধানসভায় ঢোকে। তখনই হয় অশান্তি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অর্জুন নগরের ঢিল ছোড়া দূরত্বে পটাশপুরের আড়গোয়াল পঞ্চায়েত এলাকার কালীর বাজারে সৌমেন্দুকে কালো পতাকা দেখান তৃণমূল কর্মীরা। উঠে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বচসা ও হাতাহাতি হয়। এরপর রোড শো চক্রশূলের দিকে যেতেই তীব্র উত্তেজনা বাধে। সৌমেন্দুর গাড়ির আগে বিজেপি কর্মীদের টোটো যাচ্ছিল। অভিযোগ, তাঁদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। যার দাগ দেখা যায় পাকা রাস্তায়। কয়েকটি তাজা বোমাও মেলে। উত্তেজিত বিজেপি কর্মীরা গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ শুরু করেন। সৌমেন্দুর নির্বাচনী এজেন্ট চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন, ‘‘সৌমেন্দু অধিকারীর রোড শো ঘিরে ভাল সাড়া মিলছিল। এতে তৃণমূল ভয় পেয়ে প্রথমে কালীর বাজারে আটকানোর চেষ্টা করেছিল। পরে বোমা ছুড়েছে। পুলিশের মদতেই সব কিছু ঘটেছে।’’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) শুভেন্দ্র কুমার বলছেন, ‘‘এখনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে তদন্ত করছে পুলিশ।’’
এদিকে, সৌমেন্দু ফিরে যাওয়ার পর মথুরাপুর অঞ্চল তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকটি দোকান, মোটরবাইক এবং বাড়িঘরেও ভাঙচুর করা হয় বলে দাবি। বিকেলে চক্রশূল বাজারে প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল। দলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলছেন, ‘‘সৌমেন্দু অধিকারীর রোড শো থেকে এদিন বিজেপির কর্মীরা পটাশপুরের চক্রশূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছেন। আমাদের কার্যালয়, বাড়িঘর ভাঙচুর এবং লুটপাঠ চালিয়েছে। আমাদের দু’জন কর্মী আহত হয়েছেন। বিষয়টি লিখিতভাবেই অভিযোগ জানাচ্ছি।’’ যদিও ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলছেন, ‘‘পুরোটাই সাজানো। আমাদের প্রার্থীর শান্তিপূর্ণ রোড শো আটকানোর জন্য পুলিশ পরিকল্পনা মাফিক এসব ঘটিয়েছে।’’