অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রচার সভায় শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
তাঁর জেলায় নির্বাচনের এই পর্বে প্রথম নির্বাচনী সভা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মমতার সভা করার কথা পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে। তার ঠিক আগের দিনই মুখ্যমন্ত্রীকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তমলুকের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে বললেন, ‘‘আগামীকাল মহিষাদলে আসছেন। যত আসবেন, তত হারবেন। মিথ্যা ভাষণ দিতে আসছেন।’’
দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের কাছে ২ লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে জেতানোর আবেদন বুধবার শোনা গিয়েছে বিরোধী দলনেতার মুখে। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, দুই মেদিনীপুরের সব ক’টি লোকসভা আসনে জয় ছিনিয়ে আনতে এ বার তিনি মাটি কামড়ে পড়ে থাকবেন। আগামী ১৩ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত মেদিনীপুরেই ঘাঁটি গেড়ে থাকবেন বলে জানান শুভেন্দু। প্রসঙ্গত, এর আগে খাস নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ও কাঁথি, দুই লোকসভা আসন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উপহার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন শুভেন্দু।
বুধবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে তমলুকের ডিমারী হাইস্কুল ময়দানে দলীয় কর্মী সভায় বক্তৃতায় শুভেন্দু বলেন, ’’শুধু কাঁথি-তমলুক নয়, ঘাটাল, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, সংগ্রামের মাটি, পাঁচে পাঁচ নরেন্দ্র মোদী।’’ এ দিন সভায় তিনি পূর্ব মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভার কর্মসূচিও ঘোষণা করেন। বলেছেন, ’’তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার হচ্ছে মাতঙ্গিনীর মাটি, মোদীজী আসবেন তমলুকে। আর অনেক গুন্ডা আছে, গুন্ডাদের বড় ওষুধ ‘আয়রনম্যান’ অমিত শাহজী যাবেন কাঁথিতে।’’ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ২ লাখের বেশি ভোটে জেতানোর কথা বলে সভায় উপস্থিত দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দুর আবেদন, ’’তমলুক (বিধানসভা) থেকে ৩০ হাজার মার্জিন দেন। বাকি অঙ্ক আমি মেলাব।’’ আগামী ২৭ এপ্রিল শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাঁকটিয়া বাজারে ‘রোড-শো’ করবেন বলে ঘোষণা করেন শুভেন্দু ।
এ দিন কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গত সোমবার হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রসঙ্গ তুলে অভিজিৎ বলেন,’’আমি গত পরশুদিন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে স্বীকার করতে অগ্রাহ্য করেছি। এই ভদ্রমহিলা, পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে গর্বের যে জায়গা সেই শিক্ষাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।’’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে অভিজিৎ বলেন,’’এই যে ভাইপো বন্দ্যোপাধ্যায়, এর বয়স ৩০-৩২ বছর, তুমি কত বড় নেতা হে! এত টাকা তুমি কামিয়েছে যে, এতবড় বাড়ি করতে পেরেছে। শোনা যায়, তোমার বাড়ির নীচে ভল্ট আছে। তুমি বল দেখি, তোমার বাড়ির নীচে ভল্ট নেই। আমরা শুনতে চাই।’’
শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের তমলুক লোকসভা নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান সৌমেন মহাপাত্রের বক্তব্য,’’আশাবাদী হওয়া ভাল। তবে জনগণ রায় দেবেন, তাতেই বোঝা যাবে ওঁর আশা পূরণ হয়েছে কিনা।’’ আর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে সৌমেন বলেন, ’ব্যক্তি কুৎসা করে রাজনীতি হয় না। প্রমাণ বিহীন বিষয় নিয়ে উনি যে সব কথা বলছেন তাতেই ওঁর পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে।’’