ভাঙন কবলিত এলাকায় প্রচারে বেরিয়ে প্রশ্নের মুখে বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। বৃহস্পতিবার কল্যাণীর সান্যালচর গ্রামে। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
পাঁচ বছর আগে ভোট প্রচারে এসে কথা দিয়েছিলেন— নদী ভাঙন রোধ করা হবে। পাঁচ বছর পর সেই একই গ্রামে ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ তথা এবারের বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। কিন্তু পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হলেও নদী ভাঙন রোধে কাজ হল না কেন, এই প্রশ্নের মুখে প্রার্থীকে পড়তে হল বৃহস্পতিবার। বিষয়টি নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার কল্যাণী ব্লকের চাদুরিয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে সান্যালচর গ্রামে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে ভোট প্রচারে আসেন বিজেপির শান্তনু ঠাকুর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কল্যাণীর বিধায়ক বিজেপির অম্বিকা রায়। বিদায়ী সাংসদকে কাছে পেয়েই এ দিন ক্ষোভ উগরে দেন ভাগীরথী নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকেই প্রশ্ন তোলেন— ‘‘প্রতিশ্রুতি তো দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি মতো শেষ পাঁচ বছরে নদী ভাঙন রোধে কাজ হল কোথায়?’’ ভোটের প্রচারে এসে এমন বিক্ষুদ্ধ পরিস্থিতিতে, জনগণের প্রশ্নের মুখে পড়ে শান্তনুকে বৃহস্পতিবার বলতে শোনা যায়— ‘‘নদী ভাঙন রোধে আমি আমার দফতর থেকে থেকে ১৪ কোটি টাকা খরচ করেছি। এই এলাকায় কাজ না হলেও অন্য এলাকায় কাজ হয়েছে। আগামী দিনে এখানেও কাজ হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাদুরিয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১৩টি গ্রাম সংসদ ছিল। ভাগীরথীর ভাঙনের কবলে পড়ে ইতিমধ্যেই তলিয়ে গিয়েছে সাতটি গ্রাম সংসদ। বর্তমানে পঞ্চায়েতে তেরোটি গ্রাম সংসদের মধ্যে মাত্র ছ’টির অস্তিত্ব রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কৃষিজমি থেকে রাস্তাঘাট চোখের সামনে সবই নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে দেখেছেন। অথচ, ভোট এলেই ভাঙন-রোধে সমস্ত রাজনৈতিক দলের তরফেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেই প্রতিশ্রুতি মতো আর কাজ হয় না।’’ এক বাসিন্দার কথা, ‘‘তাই এ দিন সাংসদকে সামনে পেয়ে প্রশ্ন করেছি।’’
বিষয়টি নিয়ে বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘কোন এলাকা ভাঙন-প্রবণ, তা জানতে সমীক্ষা দল কাজ করছে। আমার পক্ষে তো আর সমীক্ষা করার কাজ সম্ভব নয়। কিন্তু ইতিমধ্যেই ভাগীরথী ভাঙন রোধের জন্য ১৪ কোটি টাকা খরচ করেছি। বিষয়টি রাজ্য সরকারের কারও দেখা উচিত।’’ এর জবাবে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শেষ পাঁচ বছরে সাধারণ মানুষ সাংসদকে এলাকায় দেখেননি। নির্বাচনের আগে ভোট পাখি হয়ে তিনি এখন ভোট চাইতে আসছেন। প্রতিশ্রুতি মতো কথা রাখেননি সাংসদ। মানুষ তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাবে— এটাই স্বাভাবিক।’’
তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘ভাঙন রোধে যেটুকু কাজ হয়েছে, তা রাজ্যের তরফেই করা হয়েছে।’’