অভিষেক ভার্চুয়াল সভা শুরু করার সময় দর্শকাশন ফাঁকা। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
দুর্যোগের কারণে কপ্টার ওড়েনি। তাই রামপুরহাটে বৃহস্পতিবার আসতে পারলেন না তৃণমূলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভার্চুয়াল সভা থেকেই এ দিন রামপুরহাট বিধানসভায় ‘লিড’ তথা ব্যবধানের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বার্তা দিলেন অভিষেক। তবে অভিষেক না আসায় সভায় ভিড়ও ছিল কম।
বৃহস্পতিবার রামপুরহাট বিধানসভার অধীনে বিনোদপুরে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা করার কথা ছিল। সভায় হাজার পঞ্চাশ কর্মী-সমর্থক উপস্থিত থাকার জন্য তিন দিন থেকে সভাস্থল তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছিল। মূলত রামপুরহাট বিধানসভার দিকে নজর রেখেই অভিষেকের সভার আয়োজন হয়।
এ দিন সকাল ১১টা থেকেই সভাস্থলে রামপুরহাট বিধানসভার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস ও পুরসভা ও শহরতলি লাগোয়া এলাকা থেকে টোটো করে কর্মী-সমর্থকেরা উপস্থিত হতে থাকেন। দুপুর ২টোর সময় সভা শুরুর কথা থাকলেও সাড়ে তিনটের সময় জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মাইকে ঘোষণা করে জানিয়ে দেন শিলাবৃষ্টির কারণে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কপ্টারে সভাস্থলে উপস্থিত হতে পারছেন না। ভার্চুয়াল সভা করার কথা ঘোষণা হতেই ভিড় পাতলা হতে থাকে।
ভার্চুয়াল সভা শুরুর পরেও প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে কিছুক্ষণ সভা বন্ধ হয়ে যায়। ভিড় কমতে থাকে। সভা শুরু হলে অভিষেক বিজেপির বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে সন্দেশখালিতে মিথ্যে নারী নির্যাতনের অভিযোগ সাজানো নিয়ে তোপ দাগেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মা বোনদের যারা অপমান করেছে তাদের নির্বাচনে জবাব দিন।’’
এর পরেই অভিষেক রামপুরহাট বিধানসভার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পুরপ্রধান সৌমেন ভকতের উদ্দেশ্যে লোকসভা নির্বাচনে রামপুরহাট বিধানসভায় জয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন। অভিষেক বলেন, ‘‘রামপুরহাট বিধানসভা থেকে সর্বোচ্চ জয়ের ব্যবধান যেন থাকে।’’ গত লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম কেন্দ্র থেকে শতাব্দী রায় জয়ী হলেও রামপুরহাট বিধানসভা এলাকা থেকে ১৩ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিলেন তিনি। বিধানসভা নির্বাচনে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হলেও রামপুরহাট শহর এবং ৬টি অঞ্চলে তৃণমূল বিজেপির থেকে পিছিয়ে ছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও রামপুরহাট বিধানসভা এলাকায় ৩টি পঞ্চায়েত দখল করে বিজেপি। সে কারণেই অভিষেক রামপুরহাট বিধানসভার ব্যবধানের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছেন বলে মত দলের নেতাকর্মীদের।
মাস খানেক আগেই তারাপীঠে দলীয় কর্মীদের সভায় দলের মধ্যে বিভেদ ভুলে এক হয়ে লোকসভা নির্বাচনে কাজ করার বার্তা দিয়ে যান অভিষেক। শতাব্দী রায়ের মতামত জেনে প্রতিটি বুথে, বিশেষ করে শহর এলাকায় জয় এনে দেওয়ার কথা বলে কর্মীদের সতর্কও করে দেন অভিষেক। খারাপ ফল হলে বুথ সভাপতি থেকে অঞ্চল সভাপতি, ব্লক সভাপতি, পুরপ্রধানদের সরিয়ে দেওয়ারও বার্তা দেন। এ দিন অভিষেকের বার্তা নিয়ে আশিস ও সৌমেন বলেন, ‘‘নির্দেশ ১০০ শতাংশ কার্যকর করার চেষ্টা করব।’’
এ দিনের সভা থেকে অভিষেক কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের রাজ্যের প্রতি ১০০ দিন প্রকল্প, আবাস যোজনা নিয়ে বঞ্চনার জবাব দেওয়ার জন্য উপস্থিত কর্মী সমর্থকদের বার্তা দেন। বলেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে কথা বলতে গেলে একমাত্র তৃণমূলকে ভোট দিতে হবে। এত জোরে বোতাম টিপবেন যেন দিল্লিতে ভূমিকম্প হয়।’’ বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘মানুষ কাকে ভোট দেবেন তার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়ে নিয়েছেন। বিজেপি কর্মীরা বুথ আগলে রাখতে পারলেই তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত।’’