তৃণমূলের ক্যাম্পে বিজেপি নেতা জিতেনের আড্ডা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের দিন তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অশান্তি বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার অন্তর্গত গলসিতে। মারামারিতে মাথা ফাটল কয়েক জন তৃণমূল কর্মীর। স্থানীয় সূত্রে খবর, গলসি-১ ব্লকের জাগুলিপাড়া গ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে দুই টোটো চালক আহত হন।
লোকসভা ভোটের তৃণমূলের ক্যাম্পে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। মিষ্টি-জল খাইয়ে তাঁকে আপ্যায়ন করলেন তৃণমূল নেতা তথা আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর সুব্রত বিশ্বাস। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের আসানসোল উত্তর বিধানসভার ধাদকা স্কুল লাগোয়া তৃণমূলের ক্যাম্পে সুব্রতের হাতে হাত রেখে কথাবার্তা বলতে দেখা যায় জিতেনকে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিতেনের স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি। তিনি তৃণমূলের সুব্রতকে হারিয়েছিল পুরভোটে।
বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ দখল এবং ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। হাত শিবিরের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের ‘নীরবতার সুযোগ নিয়ে’ একের পর এক এলাকার বুথ দখল করেছে তৃণমূল। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছে কংগ্রেস।
ভোট শুরুর পর থেকেই বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার নানা জায়গায় অশান্তির খবর পাওয়া গিয়েছে। সকালে দুই যুযুধান প্রার্থী, বিজেপির দিলীপ ঘোষ এবং তৃণমূলের কীর্তি আজ়াদ কোলাকুলি করে সৌজন্য বিনিময় করলেও দুই দলের কর্মীদের মধ্যে সেই সৌজন্যের ছোঁয়া মেলেনি। যত বেলা গড়িয়েছে, ততই একের পর এক গন্ডগোলের খবর সামনে আসছে। দিলীপের গাড়ি ভাঙচুর এবং তাঁর নিরাপত্তাকর্মীদের আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, তাদের কয়েক জন কর্মী রক্তাক্ত হয়েছেন। কীর্তির অভিযোগ, ‘‘যেখানেই দিলীপ ঘোষ যান, সেখানেই উত্তেজনা ছড়ায়।’’ তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেনি।’’
রানাঘাটের কুমুদিনী স্কুলে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বিজেপি প্রার্থীকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়।
রামপুরহাট ১১৩ নম্বর বুথের ভোটার লালমণি বিবি। ওই ভোটারের অভিযোগ, তাঁর ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছেন। কর্তব্যরত প্রিসাইডিং অফিসার অবশ্য এজেন্টের দিকে বল ঠেলছেন। সকাল থেকেই ওই ভোটার ভোট দেওয়ার জন্য বসে রয়েছেন। বিকেল ৪টা বেজে যায়, তার পরেও ওই ভোটারকে বসে থাকতে দেখা যায়।
লালমণি বিবি। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুরের তানসেনে তৃণমূলের পোলিং ক্যাম্পে হামলার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে।সিপিএমের কার্যালয়েও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি কর্মীদের হামলায় বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মী জখম। বিজেপিকে এর পর তাড়া করে তৃণমূল। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের নওদা বিধানসভা এলাকার মাড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের দলুয়া গ্রামের তৃণমূল কর্মী মোহাম্মদ হাসিবুলকে আক্রমণের অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তৃণমূলে ভোট দেওয়ার ‘অপরাধে’ তাঁর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। হামলায় তাঁর কান কেটে গিয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বহরমপুরে কোন কোন বুথে ছাপ্পা হয়েছে জানিয়ে কমিশনকে চিঠি দিয়েছে কংগ্রেস।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের কুলটি বিধানসভার লালবাজার এলাকায় ৫৮/৫৯ নম্বর বুথে তৃণমূল এবং বিজেপির বচসায় উত্তেজনা। তৃণমূল সভাপতি বিমান দত্ত দলবল নিয়ে বুথে ঢোকার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। বিজেপি তার প্রতিবাদ করলে গোলমাল শুরু হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মন্তেশ্বরের পর কালনায় দিলীপের কনভয়ে আবার হামলা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয় গাড়ির কাচ। দিলীপের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়েছে। দিলীপের দুই নিরাপত্তারক্ষী ইটের ঘায়ে জখম। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বর্ধমান দুর্গাপুরের প্রার্থী।
বিকেল ৩টে পর্যন্ত বাংলার আট কেন্দ্রে ভোটের হার ৬৬.০৫ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে বোলপুরে ৬৯.০৮ শতাংশ। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে বীরভূমে, ৬৪.৯৮ শতাংশ।
কংগ্রেসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বহরমপুরের সালারের ১৬৮ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন।
বহরমপুর শহরের একটি বুথে যাওয়ার মুখে অধীর চৌধুরীর গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। অধীরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর দু’টি গাড়ি এবং রাজ্য পুলিশের এসকর্ট নিয়ে এলাকা পরিদর্শনে বাধা দেওয়া হয়। অধীরের দাবি, কেন্দ্রের দেওয়া নিরাপত্তা কাটছাঁট করার এক্তিয়ার নেই পুলিশের। ডিএসপি সুশান্ত রাজবংশীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অধীর।
বহরমপুরের একটি অংশে ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে কংগ্রেস।
সকাল থেকে এখনও পর্যন্ত চতুর্থ দফার ভোটে ১৭০৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে। দলগত ভাবে অভিযোগ রয়েছে ২৬১টি। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ রয়েছে সিপিএমের তরফে। তারা কমিশনে ইতিমধ্যে ১৫৩টি অভিযোগ জানিয়েছে। বিজেপি জানিয়েছে ২৬টি অভিযোগ। কংগ্রেস জানিয়েছে ৭৯টি অভিযোগ। এ ছাড়া, তৃণমূলের তরফে তিনটি অভিযোগ গিয়েছে কমিশনে।
আসানসোল উত্তর বিধানসভার চেলিডাঙায় ৭২ নম্বর বুথের বাইরে উত্তেজনা। বিজেপি এবং তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বচসা। বিজেপির অভিযোগ, মৃত ব্যক্তিদের নামে ভোট পড়ে যাচ্ছে ওই বুথে। খবর পেয়ে সেখানে আসেন বিজেপি নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের দাবি, ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবেই হচ্ছে।
শান্তিনিকেতনের লোহারগ্রামে ভুয়ো ভোট দেওয়ার অভিযোগ। পোলিং এজেন্ট বিষয়টি ধরে ফেলার পর গোলমাল হয়। এক ঘণ্টা ধরে বন্ধ রয়েছে ভোটগ্রহণ। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
বীরভূমের জাজি গ্রাম এলাকায় ভোট চলাকালীন কর্তব্যরত অবস্থায় আচমকাই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানের। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে রামপুরহাট গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে আসা যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাহিনী সূত্রে খবর, জওয়ানের নাম মেহেন্দ্র সিংহ (৫৫)। তিনি এএসআই পদে ছিলেন। তাঁর বাড়ি উত্তরাখণ্ডে।