আবেদন প্রকাশ করছেন বিমান বসু-সহ বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। ছবি: ফেসবুক।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি এবং তৃণমূলকে এক বন্ধনীতে ফেলে আক্রমণ শানাতে গিয়ে সিপিএম নতুন শব্দবন্ধ তৈরি করেছিল— ‘বিজেমূল’। ভোটের পরে দেখা গিয়েছিল বামেরা শূন্য হয়ে গিয়েছে রাজ্য বিধানসভায়। তার পর সিপিএম তাদের পর্যালোচনায় স্বীকার করেছিল, বিজেপি এবং তৃণমূলকে এক করে দেখানো ঠিক হয়নি। তার তিন বছর পর ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে নতুন মোড়কে পুরনো লাইনেই হাঁটল রাজ্য বামফ্রন্ট।
বৃহস্পতিবার বামেরা রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তাদের রাজনৈতিক আবেদনপত্র প্রকাশ করেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপি এই দুই দল কেউ কারও বিরোধী বিকল্প তো নয়ই, বরং বিজেপির দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবেই তৃণমূল এখানে কাজ করছে।’’ সেখানে আরও বলা হয়েছে, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে নিজেদের দুর্নীতির কারণে তৃণমূল সমঝোতার রাস্তা নিয়েছে বিজেপির সঙ্গে। বিজেপিকে এ রাজ্যে জমি ছেড়ে দিচ্ছে তারা।’’
বিজেপির ‘দ্বিতীয় বিকল্প’ হিসেবে তৃণমূলকে উল্লেখ করতে চেয়েছেন বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, নরেন চট্টোপাধ্যায়, তপন হোড়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। যে শব্দবন্ধকে রাজনীতির ভাষায় অনেকে ‘বি টিম’ বলে অভিহিত করে থাকেন। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, তিন বছর আগে বিধানসভা ভোটে বাংলায় যে লাইন খারিজ করে দিয়েছিল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি, এ বার সেই লাইনেই হাঁটল সিপিএমের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট।
আবেদনে মোদী সরকার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের নীতিকে একযোগে বিঁধেছে বামেরা। অবিজেপি রাজ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলছে তামাম বিরোধী শিবির। বাংলায় তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআইয়ের পদক্ষেপকে হেনস্থা হিসেবে তুলে ধরছে তৃণমূলও। কিন্তু বামেরা অন্য রাজ্যে ইডি, সিবিআইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিহিংসার অভিযোগ তুললেও বাংলার প্রশ্নে সেই পথে হাঁটেনি। সব কেন্দ্রে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা না-হলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে লিখিত আবেদনে বামেরা তাদের সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীদের জয়ী করার আবেদন জানিয়েছে।