Lok Sabha Election 2024

পঞ্চায়েতে অশান্ত ভাঙড়কে এ বার ঠান্ডা রাখতে প্রস্তুতি লালবাজারের

বুধবার রাতে দফায় দফায় তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ভাঙড়ে। তার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, শনিবার ভোটের দিন কি শান্ত থাকবে ওই এলাকার পরিবেশ?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ০৮:২৩
Share:

লালবাজার। —ফাইল চিত্র।

বছরখানেক আগে পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকা। রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হয়েছিল পাঁচ জনের। আবার একটি ভোট দোরগোড়ায়। তার আগে বুধবার রাতে দফায় দফায় তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ভাঙড়ে। তার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কাল, শনিবার ভোটের দিন কি শান্ত থাকবে ওই এলাকার পরিবেশ?

Advertisement

উল্লেখ্য, রাজ্য পুলিশের থেকে কলকাতা পুলিশের হাতে গিয়েছে ভাঙড়ের দায়িত্ব। দু’টি থানাকে ভেঙে করা হয়েছে চারটি থানা। আগের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে পুলিশকর্মীর সংখ্যা। গত জানুয়ারি মাসে ভাঙড়ের দায়িত্ব নিয়েই নির্বিঘ্নে ভোট করানোর লক্ষ্যে ঘুঁটি সাজিয়েছে লালবাজার। অবস্থা বিবেচনা করে খোলা হচ্ছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম। সেখানে পাঠানো হচ্ছে অতিরিক্ত বাহিনী। ভাঙড়ের কোথাও গোলমালের খবর পেলে ওই কন্ট্রোল রুমে থাকা বাহিনীকে পাঠানো হবে ঘটনাস্থলে। সেই সঙ্গে গোলমাল পাকাতে পারে, এমন দাগি অপরাধীদের আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে, যাতে তারা গোলমাল করতে না পারে। লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার একাধিক বাহিনীকে দিয়ে চষে ফেলা হয়েছে ভাঙড়ের গ্রাম থেকে জনপদ। পুলিশের দাবি, এর ফলেই এ বার বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে বড় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।

লালবাজার সূত্রের খবর, এর সঙ্গেই ভোটের দিন ভাঙড়কে ঠান্ডা রাখতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। গত বছর ভাঙড়ে মূলত গোলমাল হয়েছিল বিজয়গঞ্জ বাজার, কোচপুকুরের মতো এলাকায়। এ বার সেই এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার সঙ্গে সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশ। প্রতিদিন লালবাজারের বিশেষ দল সেখানে পরিদর্শনে যাচ্ছে। এমনকি, গোলমাল শুরু হলে তা যাতে বড় আকার ধারণ করতে না পারে, তার জন্য বিজয়গঞ্জ বাজারের কাছেই রাখা হয়েছে এইচআরএফএস-কে। যাতে এক জন ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে থাকছে দশ জনের বাহিনী। উল্লেখ্য, বছরখানেক আগে শাসকদলের হয়ে নেতৃত্ব দেওয়া আরাবুল ইসলামকে আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এখন তিনি জেল হেফাজতে আছেন।

Advertisement

এ বার ভাঙড় এলাকায় রয়েছে যাদবপুর এবং জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের ৪১০টি বুথ। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ২৪৬। প্রতিটি বুথে থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ভাঙড় এলাকায় বুথগুলিতে মোতায়েন থাকছে ১৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, ভাঙড়ের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে থাকছে ৩৬টি বিশেষ কিউআরটি। এ ছাড়া থাকছে ১৮টি কিউআরটি। সব কিউআরটিতেই থাকবেন আট জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। বিজয়গঞ্জ বাজার এবং উত্তর কাশীপুরে থাকছে ন’টি বিশেষ কিউআরটি। পুলিশ জানিয়েছে, ভাঙড় এলাকায় টহল দেবে ১০টি নাইট প্যাট্রল ভেহিক‌্যাল, ৪১টি সেক্টর মোবাইল। যাতে এক জন অফিসারের নেতৃত্বে থাকবেন তিন জন করে পুলিশকমী। এর সঙ্গেই মোটরবাইক বাহিনী এবং মোবাইল স্ট্রাইকিং বাহিনীও থাকবে।

এক পুলিশকর্তা জানান, নির্বিঘ্নে ভোট করাতে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দলকেও কাজে লাগানো হয়েছে। পাঠানো হয়েছে দু’জন উপ-নগরপালকে। পুলিশের একাংশের মতে, নির্বিঘ্নে ভোট করানোর সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তা কাজে দিল কি না, তা বোঝা যাবে আগামী কালই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement