(বাঁ দিকে) দীপ্সিতা ধর এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
দিন কয়েক আগে শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা তিন বারের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। বোঝাতে চেয়েছিলেন, কল্যাণকে এলাকায় দেখা যায় না। পাল্টা টিপ্পনীতে বুধবার দীপ্সিতাকে ‘মিস ইউনিভার্স’ বলে বিঁধলেন কল্যাণ।
এ দিন সকালে লিলুয়ার চকপাড়া থেকে জয়পুর বিল পর্যন্ত হুড খোলা জিপে প্রচার করেন কল্যাণ। তাঁর আক্রমণের মূল লক্ষ্যই ছিলেন দীপ্সিতা। রবীন্দ্র-কবিতা আবৃত্তি করে ‘ধানের শিষের উপরে শিশির বিন্দু’ দেখার সঙ্গে দীপ্সিতার মন্তব্যের তুলনা টেনে কল্যাণ বলেন, ‘‘মিস ইউনিভার্স দেশ-বিদেশ ঘুরে শেষ পর্যন্ত শ্রীরামপুরে এসে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’কে দেখতে পেয়েছেন!’’ একই সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থীর সংযোজন, ‘‘আপনার কথার জবাব মানুষ ২০ মে দেবে। গণনার দিন শেষ পর্যন্ত থাকবেন। আমি যখন শংসাপত্র নেব, তখন দেখে যাবেন, কে জিতেছে।’’ একই সঙ্গে কল্যাণের কটাক্ষ, ‘‘আগে ভিয়েতনামে বৃষ্টি হলে এখানে সিপিএমের কমরেডরা কৌটো নিয়ে সাহায্য তুলতে পথে নামতেন। এখন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএফআই জেতার আনন্দে মনে করছেন শ্রীরামপুরেও জিতবেন!’’
দীপ্সিতা এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনের পরিচিত মুখ। সিপিএমের এই তরুণ প্রজন্মের প্রার্থীর বাড়ি ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রে। দীপ্সিতার অভিযোগ ছিল, পনেরো বছরের সাংসদ হলেও কল্যাণকে তিনি বা তাঁর মতো সাধারণ মানুষ এলাকায় দেখতে পান না। এই প্রসঙ্গেই তিনি ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ বলে কল্যাণকে কটাক্ষ করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ওই সিনেমায় নায়ক অনিল কপূর একটি ঘড়ি পরলে অদৃশ্য হয়ে যেতেন। কল্যাণ শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে তেমনই ‘অদৃশ্য’।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে দীপ্সিতা হেরে যান। তাঁর মা তিন বার পঞ্চায়েত সমিতি এবং এক বার জেলা পরিষদের আসনে দাঁড়িয়েও জিততে পারেননি। এ দিন সেই প্রসঙ্গও তোলেন কল্যাণ। বিদায়ী সাংসদের দাবি, গত ১০ বছরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সংসদে এ রাজ্য থেকে সব চেয়ে বেশি প্রতিবাদ তিনিই জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই যেমন চলবে, তেমনই সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাব।’’
পাল্টা জবাবে দীপ্সিতা বলেন, ‘‘যতবার বিদেশে গিয়েছি, পড়াশোনার কাজে। এলাকার সাংসদ হিসাবে ওঁর তো খুশি হওয়া উচিত ছিল। বাংলার মেয়ের এমন কৃতিত্ব ওঁর চোখে লাগল কেন! বাংলার মেয়ে বলতে শুধু কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!’’