আইএনটিটিইউসি-র কর্মী সম্মেলনে মলয় ঘটক। রবিবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র ।
শ্রমিকদের সামনে রাজ্য সরকারের সদর্থক ভূমিকাকে তুলে ধরে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে জয়ী করার আহ্বান জানালেন রাজ্যের শ্রম ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক। একই সুর শোনা গেল সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। তবে, এ দিন আমন্ত্রিত হওয়া সত্ত্বেও সভা মঞ্চে দেখা মিলল না জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের। রবিবার যা নিয়ে জল্পনা ছড়াল সিউড়িতে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সম্মেলনে।
যদিও কাজল বলেন, ‘‘এ দিন পাপুড়িতে রাজনৈতিক সন্ত্রাসে মৃত ছদু শেখের পরিবারের একটি অনুষ্ঠান ছিল। এই অনুষ্ঠান পূর্ব নির্ধারিত এবং এখানে আমাকে উপস্থিত থাকতেই হত। তাই আমি সিউড়ি যেতে পারিনি। এই নিয়ে জল্পনার কিছু নেই।’’
এ দিন সিউড়ির ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই সম্মেলনের উদ্বোধক করেন মলয়। সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন ঋতব্রত। এ ছাড়াও জেলার কোর কমিটির পাঁচ সদস্য, জেলার দুই সাংসদ এবং জেলার অধিকাংশ বিধায়ক, পুরপ্রধান ও জেলা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত হয়েছিলেন সম্মেলনে। দেখা মেলেনি শুধু কাজলের।
সম্মেলন উপলক্ষে কয়েক দিন আগে থেকেই সিউড়ি শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার, ফ্লেক্স ও অস্থায়ী তোরণ লাগান হয়। সবগুলিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মলয় ঘটকের পাশাপাশি প্রাক্তন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ছবি দেওয়া হয়। ছিল না কাজলের ছবি ছিল না। যা নিয়েও গুঞ্জন ছিল দলের অন্দরে।
এ দিন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমন্ত্রণ পত্রে কাজল শেখের নাম ছিল। ওঁকে আমন্ত্রণও জানান হয়েছিল। আমার সঙ্গে ওঁর কথাও হয়েছিল। তবে তিনি কেন আসেননি, তা বলতে পারব না। হয়ত কোনও কাজে আটকে গিয়েছেন।” আর ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অনুব্রত প্রত্যেক তৃণমূল সমর্থকের মনের মণিকোঠায় আছেন। উনি আমাদের সমস্ত দিক দেখতেন। তাই আমরা ওঁর ছবি ব্যবহার করছি।”
এ দিন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মলয় ও ঋতব্রত দু’জনেই কেন্দ্রের নতুন চারটি শ্রম-কোডকে নিশানা করেন। তাঁদের অভিযোগ, এই কোড চালু করে শ্রমিকের স্বার্থকেই ধ্বংস করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁদের আশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে সেই শ্রম-কোড চালু করতে দেননি।
ঋতব্রত বলেন, ‘‘সামনে লোকসভা নির্বাচন। শ্রমিকের অধিকারকে সুরক্ষিত রাখতে গেলে, তাঁদের সংগঠন করার অধিকারকে বজায় রাখতে গেলে বিজেপিকে হারাতেই হবে।”
অন্য দিকে, মলয় বলেন, ‘‘শ্রমিককে ভুল বুঝিয়ে, লাল ঝান্ডা নিয়ে মিছিল করে, শ্রমিক ঐক্যের ডাক দিত বামপন্থীরা। কিন্তু শ্রমিকদের উন্নয়নে তারা কোনও কাজ করেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই শ্রমিকদের প্রকৃত উন্নয়ন হয়েছে।” মঞ্চ থেকে বীরভূম জেলায় যাতে এক জন শ্রমিকও সামাজিক সুরক্ষা যোজনার থেকে বাদ না যান, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ত্রিদিব। পাশাপাশি, লোকসভা নির্বাচনের আগে বীরভূমে সারা বাংলা তৃণমূল তাঁত শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সারা বাংলা তৃণমূল নির্মাণ কর্মীদের জেলা কমিটি গঠন করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।