(বাঁ দিক থেকে) মিমি চক্রবর্তী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সায়নী ঘোষ। —ফাইল চিত্র
গত পাঁচ বছর যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ ছিলেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। কিন্তু মিমির কাছে যাদবপুর যে সে ভাবে ‘সার্ভিস’ পায়নি, তা খোলা মঞ্চ থেকে স্বীকার করে নিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা মিমির নাম করেননি। তবে বুঝিয়ে দিয়েছেন কার উদ্দেশে বলছেন। পাশাপাশিই, মিমিকে দোষ না দিয়ে সেই দোষ তৃণমূলের ঘাড়েই নিলেন দলের সর্বময় নেত্রী। এবং সেই দোষ শুধরে নিতেই যে এ বার অভিনেত্রী থেকে যুবনেত্রী হয়ে ওঠা সায়নী ঘোষকে তৃণমূল যাদবপুরে প্রার্থী করেছে, রবিবার তা-ও স্পষ্ট করে দেন মমতা।
সায়নীর সমর্থনে সোনারপুরের জনসভা থেকে মমতা বলেন, “আমার প্রার্থী সায়নী। সায়নীকে দিয়েছি এই কারণে যে, আগের বার আপনারা অতটা সার্ভিস পাননি। তার অবশ্য কোনও দোষ ছিল না। সে নিজে ফিল্ম জগতে ব্যস্ত। এটা আমাদেরই দোষ। সেই কারণেই শুধরে নেওয়ার জন্য… সায়নী এলাকায় পড়ে থেকে লড়াই করবে। এবং দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করবে।”
মিমি নিজেই রাজনীতি থেকে সরতে চেয়েছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভায় গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করে সে কথা জানিয়েও এসেছিলেন তিনি। যাদবপুর লোকসভার মধ্যে দলের একটি অংশের সঙ্গে মিমির কয়েক বছর ধরেই বনিবনা ছিল না বলে শোনা যায়। গত ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভায় মমতার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে মিমি বলেছিলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতি আমার জন্য নয়। কারণ, রাজনীতি করলে আমার মতো মানুষকে গালাগালি দেওয়ার লাইসেন্স পেয়ে যায় লোকে। আমি জেনেশুনে জীবনে কারও কোনও ক্ষতি করিনি।’’
প্রাথমিক ভাবে শোনা গিয়েছিল, যাবদপুরের বদলে মিমিকে অন্য কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে তা প্রকাশ্যে শাসদকদল বা মিমি—কোনও তরফেই কিছু বলা হয়নি। গত ১০ মার্চ ব্রিগেডে তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর দেখা যায়, মিমির নাম নেই। যাদবপুরে প্রার্থী করা হয়েছে সায়নীকে।
গত ১৫ বছর ধরে তৃণমূলের দখলে রয়েছে যাদবপুর লোকসভা। যদিও প্রতিবারই প্রার্থী বদল করেছে তারা। ২০০৯ সালে জিতেছিলেন কবীর সুমন। ২০১৪ সালে সুমনকে সরিয়ে মমতা টিকিট দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্য তথা অধ্যাপক সুগত বসুকে। ২০১৯ সালে সুগতকে বদলে মিমিকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। এ বার মিমির বদলে সায়নী।