সুপ্রিয়া সুলে (বাঁ দিকে)। এবং সুনেত্রা পওয়ার। —ফাইল চিত্র।
‘আসল-নকল’-এর যুদ্ধের পর এ বার শরদ পওয়ারের এনসিপিতে ননদ-বৌদির যুদ্ধও দেখতে চলেছে ছত্রপতির রাজ্য।
লোকসভা ভোটের পারদ একটু অন্য ভাবে চড়তে শুরু করেছে মহারাষ্ট্রে। শাসক-বিরোধীর লড়াইয়ের বদলে এখন এ রাজ্যে বেশি মাথা চাড়া দিয়েছে বিরোধীদের দলীয় কোন্দল। শিবসেনার মতোই এনসিপিতেও এখন চলছে আসল-নকলের লড়াই। শরদ এবং অজিত পওয়ার এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোন দল ‘আসল এনসিপি’ তা নিয়ে শুরু হয়েছে আইনি যুদ্ধ। এরই মধ্যে পওয়ারদের খাসতালুক মহারাষ্ট্রের বরামতীতে দুই পওয়ারের সম্মুখ সমরের ইঙ্গিত মিলল। তবে এই যুদ্ধ আসল-নকলের নয়। দুই তরফই পওয়ার পরিবারের সদস্য। একজন বরামতীর টানা তিন বারের জয়ী এনসিপি সাংসদ তথা শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে। অন্য জন সুনেত্রা পওয়ার। সম্পর্কে অজিতের স্ত্রী এবং সুপ্রিয়ার বৌদি। মহারাষ্ট্রে খবর, বরামতীর সাংসদ সুপ্রিয়ার বিরুদ্ধে স্ত্রী সুনেত্রাকে দাঁড় করাতে চলেছেন অজিত।
কেন জল্পনা?
শুক্রবারই একটি বক্তৃতায় অজিত বরামতীর ভোটারদের উদ্দেশে একটি সবিনয় আর্জি করেছেন। নাম না করে অজিত বলেছেন, ‘‘আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ আপনারা এ বার এক জন নতুন প্রার্থীকে নির্বাচিত করুন।’’ একই সঙ্গে অজিত জানিয়েছেন, নতুন হলেও ওই প্রার্থী রাজনীতি থেকে দূরের মানুষ নন। বরং তাঁর চারপাশে ঘিরে রয়েছে অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদেরা। সুনেত্রা ইতিমধ্যেই বরামতীতে অজিতের দলের হয়ে প্রচারের কাজ শুরু করেছিলেন। তখন থেকেই তাঁকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। অজিতের এই বক্তৃতা তাঁর স্ত্রী সুনেত্রাকে নিয়ে জল্পনায় ইন্ধন দিয়েছে।
বরামতী কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বরামতী হল শরদের খাসতালুক। এনসিপি প্রতিষ্ঠাতা শরদ এই বরামতী থেকে টানা ছ’বার বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন। লোকসভা নির্বাচনে জিতেছেন টানা পাঁচ বার, মোট ছ’বার। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কন্যা সুপ্রিয়াকে নিজের এই আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলেন শরদ। তার পর থেকে টানা তিন বার লোকসভা ভোটে সুপ্রিয়াই জিতেছেন এই আসন থেকে। সেই আসনেই এ বার সুপ্রিয়াকে তাঁর নিজের পরিবারের সদস্যের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে জল্পনা।
সুনেত্রা পওয়ার কে?
সুনেত্রা যেমন অজিতের স্ত্রী, তেমনই তিনি নিজেও রাজনৈতিক পরিবারের কন্যা। তাঁর ভাই পদ্মসিংহ পাটিল প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রীও। সুনেত্রা এবং অজিতের দুই সন্তান জয় পওয়ার এবং পার্থ পওয়ার। এঁদের মধ্যে জয় পারিবারিক ব্যবসা সামলালেও পার্থ সক্রিয় ভাবে রাজনীতি করেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি, তবে হেরে যান। সুনেত্রা নিজে সমাজকর্মী। বরামতীতে তিনি বহু কাজ করেছেন। তাঁর নিজস্ব একটি এনজিও রয়েছে।