খণ্ডঘোষে সভা। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের মন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভায় ব্লক সভাপতির অনুপস্থিতি উস্কে দিয়েছে খণ্ডঘোষে তৃণমূলের অন্দরে কোন্দল-বিতর্ক। বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা
মণ্ডলের সমর্থনে বুধবার খণ্ডঘোষের হাটতলায় সভা করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ছিলেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাণিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সভায় দেখা যায়নি দলের খণ্ডঘোষের ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলামকে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, স্থানীয় বিধায়ক নবীন বাগ এবং ব্লক সভাপতির মধ্যে পঞ্চায়েত এলাকা ভাগাভাগি করা রয়েছে। খণ্ডঘোষ বিধায়কের এলাকা। সে কারণেই ব্লক সভাপতিকে সভায় দেখা যায়নি। বিরোধীদের কটাক্ষ, ব্লক সভাপতি সাহায্য না করায় জনসভা আদতে গ্রাম্যসভায় পরিণত হয়েছে। তা-ও রায়না ও বর্ধমান থেকে লোক
আনতে হয়েছে। এই কটাক্ষ গায়ে মাখেনি তৃণমূল।
নবীনের বক্তব্য, ‘‘অনেক জায়গায় প্রচার আছে। সেখানে গিয়েছেন উনি। তাই আসতে পারেননি।’’ আর অপার্থিবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কাল প্রচারের শেষ দিন। আজ অনেক জায়গায় প্রচার ও চাটাই বৈঠক ছিল। সে কারণে সভায় যাওয়া হয়নি।’’
এ দিন সভায় বিজেপিকেই মূল নিশানা করেন অরূপ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আবাস প্রকল্পে টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। ১২৫টি দল এসেছিল। সবাই বলে দিল, হিসেব ঠিক আছে। তার পরেও টাকা দিল না। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের শ্রমিকদের মজুরি মিটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্র গরিবের পাশে দাঁড়ায় না।’’ খণ্ডঘোষে সিপিএমের উপস্থিতি চোখ এড়ায়নি অরূপের। তিনি বলেন, ‘‘খণ্ডঘোষের কয়েকটি জায়গায় সিপিএমের পতাকা দেখলাম। ৩৪ বছরে এখানে কিছুই করেনি ওরা। গরিবের বন্ধু যদি কেউ হন, তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মান দিয়েছেন মমতা। আর ভোট চাইবে সিপিএম, বিজেপি?’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ তুলে অরূপ বলেন, ‘‘মোদী ১০ বছর ক্ষমতায়। রিপোর্ট কার্ড কোথায়?
শুধু হিন্দু, মুসলিম। আমরাও তো
হিন্দু, রামভক্ত। মোদী মন্দিরের দেবতাকে রাস্তায় নামিয়ে এনেছেন। এটা সহ্য হবে না। প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে বিজেপিকে।’’ বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্রকে বিঁধে বলেন, ‘‘উনি বলেছেন, জগন্নাথদেব মোদীর ভক্ত। কত মূর্খ, কত অপদার্থ। এদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে হবে।’’ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গ তুলে
অরূপ বলেন, ‘‘সিএএ আনছে।
বাড়ির ছাদ উঠে যাবে, আকাশও থাকবে না। ডিটেনশন ক্যাম্পে চলে যেতে হবে। আমরা কাউকে কাগজ দেখাব না। মাতৃভূমি থেকে আলাদা করতে দেব না।’’
বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের মন্তব্য, ‘‘মন্ত্রী বুঝে গিয়েছেন, কেন্দ্রে আরও এক বার নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সরকার তৈরি হচ্ছে। তাই যা পারছেন বলছেন।’’ সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘খণ্ডঘোষে এসে মন্ত্রী টের পেয়েছেন, মানুষ তাঁদের থেকে মুখ ফিরিয়েছে। আমরা ভাল ফল করব।’’