—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোটের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলতে চলতেই তৃতীয় দফার পরিস্থিতি বুঝে রণকৌশল ছকে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তাতে মালুম হচ্ছে, প্রথম দু’টি দফার থেকেও তৃতীয় দফাতে রাজ্যে আরও বেশি সংখ্যায় অতি সংবেদনশীল (ক্রিটিক্যাল) ভোটকেন্দ্র থাকতে পারে।
এ বারে রাজ্যের সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোটে যাচ্ছে কমিশন। আর তাই, প্রতিটি বুথকেই বলা হচ্ছে সংবেদনশীল। কিন্তু, তার পরেও আলাদা করে অতি সংবেদনশীল বুথ চিহ্নিত করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় দফায় রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে সব থেকে বেশি ২৪ শতাংশ অতি সংবেদনশীল ভোটকেন্দ্র চিহ্নিত হয়েছে। কমিশনের যা বিশ্লেষণ, তৃতীয় দফার (৭ মে) চারটে লোকসভা কেন্দ্রেই তার থেকে অনেক বেশি ‘ক্রিটিক্যাল’ ভোটকেন্দ্র থাকার কথা।
রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে ১৮২৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬৫১টি (৩৬%) হল অতি সংবেদনশীল। মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে ১৭৪৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭০২টি অতি সংবেদনশীল (৪০%)। ওই পর্যায়ে ভোটমুখী মুর্শিদাবাদের দু’টি কেন্দ্রও মালদহের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। জঙ্গিপুরে ১৮৫১টির মধ্যে ৭৬২টি (৪১%) এবং মুর্শিদাবাদে ১৯৩৮টির মধ্যে ৭১৫টি ভোটকেন্দ্র (৩৭%) অতি সংবেদনশীল বলে দেখা যাচ্ছে।
তবে এখনই তৃতীয় পর্যায়ের জন্য অতি সংবেদনশীল ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা চূড়ান্ত বলা যাচ্ছে না। এই সংখ্যাগুলি পরিস্থিতি জরিপ করে পর্যবেক্ষকদের নির্দেশে আরও বাড়তে পারে। সাধারণত, টাটকা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে ভোটের তিন, চার দিন আগে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কমিশনের বিধিমাফিক কোনও একটি ভোটকেন্দ্র বা বুথ ‘ক্রিটিক্যাল’ বলে চিহ্নিত করার জন্য সেখানে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির স্পর্শকাতরতা দেখা হয়। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এক বছর আগের পঞ্চায়েত ভোটের মানদণ্ড প্রাধান্য পাচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের গোলমাল বা হিংসার ইতিহাস মাথায় রাখা হচ্ছে। কোনও একটি এলাকায় জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার হার এবং গোলমাল পাকানোর মতো লোকের সংখ্যাও দেখা হয়। আর কমিশনের নিয়ম মতো কোনও একটি বুথে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়লে, কোনও এক জন প্রার্থী ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পেলে এবং কোনও একটি বুথে ১০ শতাংশের কম ভোট পড়লেও তা অতি সংবেদনশীল বলে ধরা হয়। এই সব দিকগুলি বিচার করে এই সপ্তাহেই তৃতীয় পর্যায়ের ভোটের জন্যও আধা সামরিক বাহিনী মোতায়নের পরিকল্পনা যত দূর সম্ভব এগিয়ে রাখতে চায় কমিশন।