—প্রতীকী চিত্র।
শাসক দলের সঙ্গে নয়। লোকসভা ভোটে আলাদা করে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’ (বংশী গোষ্ঠী)। সংগঠনের প্রধান বংশীবদন বর্মণ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার থেকে ছোট-ছোট সভার মধ্যে দিয়ে ময়দানে নেমেছেন গ্রেটার সমর্থকেরা। সংগঠনের দাবি, নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতেই লোকসভা ভোটে আলাদা ভাবে প্রচার করবেন তাঁরা। বড় প্রচার সভায় ডাকা হবে তৃণমূল প্রার্থীকে। তৃণমূলের ডাক পেলে সভায় যোগ দেবেন বংশীবদন। বংশীবদন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের রাজবংশী সমাজের জন্য উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাই আমরা তাঁর সঙ্গে রয়েছি। নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার জন্যেই আমরা আলাদা করে প্রচার করব।’’ তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, ‘‘যে কোনও সংগঠন নিজেদের মতো করে প্রচার করতেই পারে। গ্রেটার একটি আলাদা সংগঠন, তারাও নিজেদের মতো প্রচার করতে পারে। আমাদের কর্মসূচি নিয়ে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’
গ্রেটার কোচবিহারের দু’টি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে কোচবিহারে। তাদের মধ্যে একটির মাথায় রয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন্দ্র রায় তথা অনন্ত মহারাজ। নগেন্দ্র সরাসরি বিজেপির রাজ্যসভায় মনোনীত সাংসদ হওয়ায়, তিনি যে লোকসভা ভোটে কেন্দ্রের শাসক দলের প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের হয়ে প্রচার করবেন, তা প্রত্যাশিত। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে নগেন্দ্র খুশি নন, সে জন্য তাঁকে এখনও দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে ভোট চাইতে দেখা যায়নি। এই অবস্থায় তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত বংশীবদন কী করেন, সে দিকে নজর ছিল সবার।
সোমবার বংশীবদনের গ্রেটারের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে লোকসভা ভোটে কোচবিহার আসনের তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার হয়ে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নেয় গ্রেটার। সে মতো মঙ্গলবার থেকে প্রচারও শুরু করা হয়। বংশীবদন রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি ও রাজবংশী উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি, উন্নয়ন পর্ষদ, রাজবংশী ভাষার স্কুল থেকে শুরু রাজ্য পুলিশে নারায়ণী ব্যাটালিয়ন, চিলা রায়ের মূর্তি তৈরির মতো প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন। সে সব কথা মাথায় রেখে এ বারও তৃণমুল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
একাধিক নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা গিয়েছে বংশীবদনকে। গ্রেটার সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, শাসক দলের জয় অথবা পরাজয়ের পরে অনেকেই দাবি করেন, এর পিছনে গ্রেটারের কোনও ভূমিকাই ছিল না। সে কথা মাথায় রেখেই নিজেদের সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখাতে আলাদা প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রেটার। সেই সঙ্গে শক্তি প্রদর্শনে একটি বড় সভার আয়োজন করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।