Lok Sabha Election 2024

আমি থাকি বা না থাকি, ঘাটাল আমার হৃদয়ে থেকে যাবে! সংসদে শেষ ভাষণে দেব খানিক আবেগতাড়িত

তৃণমূল সূত্রে খবর, দেবকে ভোটে দাঁড় করানোর বিষয়ে আগ্রহী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীপুজোর পরের দিন দিদির বাড়িতে দধিকর্মা খেতে গিয়েছিলেন দেব। সে দিন বেশ খানিক ক্ষণ কথা হয়েছিল দু’জনের মধ্যে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৫৩
Share:

দেব। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।

লোকসভায় তাঁর বরাদ্দ আসনের ছবি বুধবার পোস্ট করে ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী (দেব) লিখেছিলেন, ‘আর কয়েক ঘণ্টা’। বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত ঘোষণা করে দিলেন দেব। সংসদের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে লিখলেন, ‘‘সংসদে আমার শেষ দিন। ধন্যবাদ দিদি। ধন্যবাদ ঘাটালবাসীকে।’’

Advertisement

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংসদের বক্তৃতায় দেব বলেছিলেন, ‘‘আমি থাকি বা না থাকি, ঘাটাল আমার হৃদয়ে থেকে যাবে।’’ যে বাক্যবন্ধকে অনেকেই সমাপ্তি বক্তৃতা বলেই ভেবেছিলেন। হলও তাই। পাশাপাশিই দেব বলেছিলেন, ‘‘১০ বছর সাংসদ হিসাবে কাজ করতে দেওয়ার জন্য আমি আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’’

অধিবেশনের পরে নতুন সংসদ ভবনের বাইরে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেব বলেছিলেন, ‘‘ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়ে আমার কী বক্তব্য তা এক বছর আগেই আমি নেত্রীকে জানিয়েছিলাম। কয়েক দিন আগেও তা জানিয়েছি। এখন এ নিয়ে কিছু বলব না।’’ যদিও পরে সমাজমাধ্যমে তা স্পষ্ট করে দেন। সংসদের বক্তৃতায় দেব এ-ও বলেন, ‘‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য ১০ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও অর্থ দেয়নি। যা করার রাজ্য করেছে।’’

Advertisement

বস্তুত, ঘাটাল মহকুমায় প্রতি বছর বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। তা রুখতেই মাস্টার প্ল্যানের কথা বহু দিন ধরেই আলোচনার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে ভোটের সময়ে তা ‘ইস্যু’ হলেও কার্যকর হয় না। সম্প্রতি বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকার ১৬০০ কোটি টাকা দিলেও কাটমানির ভাগাভাগির লড়াইয়ে সেই টাকা ফেরত চলে গিয়েছে। সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেব বলেন, ‘‘কারা বলছে আমি জানি না। তবে সংসদেও বলেছি, কেন্দ্র কোনও টাকা দেয়নি। যতটুকু হয়েছে তা রাজ্যের টাকাতেই হয়েছে।’’ উল্লেখ্য, দেব নিজেও ঘাটালের ভূমিপুত্র।

দেব ভোটে দাঁড়াবেন কি না তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই গুঞ্জন চলছে। শাসকদলের মধ্যে এই আলোচনা রয়েছে, রাজ্যের এক মন্ত্রীর উপর দেব ক্ষুব্ধ। তাঁর ছবি নন্দনে জায়গা না পাওয়া নিয়েই নাকি সেই ক্ষোভের সূত্রপাত। যদিও অভিনেতা-সাংসদ কখনও, কোথাও প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কিছু বলেননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠেরা জানিয়েছিলেন, তিনি ক্ষুব্ধ। আবার অনেকের মতে, দেব-ঘনিষ্ঠেরা মন্ত্রীর উপর ক্ষোভের কথা বললেও নেপথ্যে অন্য কারণ রয়েছে। সেই কারণ কী? তাঁদের বক্তব্য, গরু পাচার মামলার তদন্তের সূত্রে দেবকে ডেকেছিল সিবিআই। অভিযোগ, গরু পাচারের টাকা দেবের ছবিতে বিনিয়োগ হয়েছিল। দেব কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে এড়াতেই আর ভোটে দাঁড়াতে চান না বলে বক্তব্য ওই অংশের।

তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেবকে ভোটে দাঁড় করানোর বিষয়ে আগ্রহী। কালীপুজোর পরের দিন দিদির বাড়িতে দধিকর্মা খেতে গিয়েছিলেন দেব। সে দিন বেশ খানিক ক্ষণ দু’জনের মধ্যে কথা হয়েছিল। কিন্তু শাসকদলের একাধিক নেতার বক্তব্য, দেব মমতার সামনেও ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়ে হ্যাঁ, না কিছুই বলেননি। তবে জনশ্রুতি, বিশ্বকাপে ইডেনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দেখতে গিয়ে দেব তাঁর ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছিলেন, তিনি আর ভোটে দাঁড়াতে চান না। তারও আগে আনন্দবাজার অনলাইনের ‘অ-জানাকথা’য় দেব বলেছিলেন, ‘‘যদি সম্ভব হয়, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে আর দাঁড়াতে চাই না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement