হারলেন দু’পক্ষের চারজন দলবদলু প্রার্থী। ফাইল ছবি।
দেশের রাজনীতিতে নেতাদের দলবদল করা কোনও নতুন বিষয় নয়। কিন্তু আমজনতার যে দলবদলু নেতাদের না পসন্দ, তা বাংলার লোকসভা ভোটে আবারও বোঝা গেল। একে একে তৃণমূল বিজেপি দু’পক্ষের চারজন দলবদলু প্রার্থী হারলেন বিরাট ব্যবধানে। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে আবারও দলবদল করেছিলেন বারাকপুরের বিদায়ী সাংসদ অর্জুন সিংহ। ২০১৯ সালে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন তিনি। সেবার ১৪ হাজারের কিছু বেশি ভোটে তৃণমূল প্রার্থী দিনেশ ত্রিবেদীকে হারিয়ে দেন। কিন্তু ২০২২ সালের মে মাসে ফিরে আসেন বিজেপিতে। কিন্তু ১০ মার্চ ব্রিগেডে ব্যারাকপুর আসনে প্রার্থী হিসাবে পার্থ ভৌমিকের নাম ঘোষণা হলে, আবারও বিজেপিমুখী হন অর্জুন। মঙ্গলবার গণনার প্রথম দিকে এগিয়ে গেলেও, পরে রাউন্ড এগোনোর সঙ্গে সঙ্গেই পিছতে থাকেন তিনি। শেষে ৬৪,৪৩৮ ভোটে পার্থর কাছে পরাজিত হয়েছেন অর্জুন।
একই ভাবে বিজেপি ছেড়ে ২০২১ সালে তৃণমূলে যোগদান করা কৃষ্ণ কল্যাণীকে রায়গঞ্জ লোকসভায় প্রার্থী করা হয়েছিল। তিনি আবার বিজেপি প্রার্থী কার্তিক পালের কাছে ৬৮ হাজার ১৯৭ ভোটে পরাজিত হয়েছেন তিনি। নিজের বিধায়কপদ থেকে ইস্তফা দিয়ে লোকসভায় প্রার্থী হয়েছিলেন কৃষ্ণ। কিন্তু লোকসভায় রায়গঞ্জ লোকসভা আবারও নিজেদের দখলে রাখতে সফল হল বিজেপি। আবার রানাঘাট লোকসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমনি অধিকারী। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে তাঁর ‘কটু’ সম্পর্কের কথা কারও অজানা ছিল না। আবারও জগন্নাথ রানাঘাটে বিজেপির প্রার্থী হতেই তৃণমূলে যোগ দেন মুকুটমনি। রানাঘাটেই তাঁকে টিকিট দেয় বিজেপি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিরাশ হয়েই গণনা কেন্দ্র ছাড়েন এই যুবা চিকিৎসক। ১ লক্ষ ৮৬ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপি প্রার্থীর কাছে হার মানতে হয়েছে তাঁকে। তিনিও লোকসভায় প্রার্থী হওয়ার আগে রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।
বনগাঁ লোকসভা আসনে বিদায়ী কেন্দ্রীয় সরকারের জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর আবারও জয়ী হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থীর করেছিল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করা বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে। বিধায়কপদ ছেড়ে লোকসভায় প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভোট গণনার একটি রাউন্ডের এগিয়ে যেতে পারেননি বিশ্বজিৎ। শেষে ৭৩ হাজারের বেশি ভোট পরাজিত হয়েছেন এই দলবদলু নেতা।