তৃণমূলের প্রচারগাড়িকে গ্রামে ঢুকতে বাধা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট আসে, ভোট যায়। কিন্তু এত দিনেও সেতু সংস্কার হল না! প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় এ বারের লোকসভা ভোট বয়কটের ডাক দিল পূর্ব বর্ধমানের মেমারি বিধানসভা এলাকার বাগিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের দিলালপুর-সহ পাঁচটি গ্রাম। শুধু ভোট বয়কটই নয়, গ্রামে রাজনৈতিক প্রচারও বন্ধ করে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা!
রবিবার সন্ধ্যায় বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকারের সমর্থনে দলীয় কর্মীরা দিলালপুরে প্রচারে যান। অভিযোগ, গ্রামে ঢুকতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, দাবি পূরণ না হলে তাঁরা ভোট দেবেন না। স্থানীয় বাসিন্দা অমর ঘোষ বলেন, ‘‘একের পর এক ভোট চলে যাচ্ছে। লোকসভা ভোটের পর বিধানসভা ভোট। তার পর পঞ্চায়েত ভোট। সব ভোটই পার হয়। কিন্তু সেতুর কাজ হয় না। জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় আসেন। ভোট মিটে গেলে তাঁদের কারও টিকি খুঁজে পাওয়া যায় না।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, দিলালপুর হয়ে মেমারি আসার একমাত্র রাস্তা ওই কাঠের সেতুটি। ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ডিভিসি সেচ খালের উপর সেটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাম আমলে সেতুটি তৈরি হলেও তার পর থেকে আর রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। এখন একেবারে ভগ্নপ্রায় দশা। বিপজ্জনক হিসাবে চিহ্নিত করে একাধিক বার সেতুটি বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে। পরে স্থানীয়দের চাপে তা আবার খোলা হয়। কিন্তু গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, যে কোনও সময়েই সেটি ভেঙে পড়তে পারে। কিন্তু ঝুঁকি নিয়েই পারাপার করতে হচ্ছে। তাঁদের দাবি, সেতু মেরামত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা গ্রামে প্রচার চালাতে দেবেন না। ভোটও বয়কট করবেন। সেই মতো ভোট ঘোষণা হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত দিলালপুর-সহ পার্শ্ববর্তী আরও পাঁচ-ছ’টি গ্রামে কোথাও কোনও রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের ছবি দেওয়া ব্যানার নেই। দেওয়াল লিখন থাকলে তা-ও মুছে দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘১৩ বছরে ওখানে তৃণমূল সরকার কোনও কাজ করেনি। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবাদ জানান। কাজ না হলে মানুষ বলবে। সেটা মাথা পেতে মেনে নিতে হবে।’’ অন্য দিকে, মেমারি ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নিতাই বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সেতুর সমস্যার কথা আমরা জানি। ইতিমধ্যেই সেটির মেরামতের প্রক্রিয়া চলছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্রের ব্যাপার আছে। কারণ, ডিভিসির সেচ খালের উপর সেতু হবে।’’