—ফাইল চিত্র।
গুলি চলেছিল গত বিধানসভা ভোটের দিন। মৃত্যু হয়েছিল চার ভোটারের। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর রক্ষীদের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগকে কেন্দ্র করে সেই সময় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। এ বার লোকসভা ভোটে কোচবিহারের শীতলখুচির সেই বুথের নিরাপত্তায় সিআইএসএফ-কে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন।
লোকসভা ভোটের প্রথম দফায় আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে ভোট হবে। আগামী ১৯ এপ্রিল সেখানে ভোট। কমিশন সূত্রে খবর, বাস্তব পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থির হয়েছে, সিআইএসএফের পরিবর্তে সেখানে বিএসএফ, সিআরপিএফ অথবা আইটিবিপির বাহিনী পাঠানো হতে পারে।
২০২১-এর ১০ এপ্রিল ভোটের দিন শীতলখুচির জোরপাটক গ্রামের ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে গুলি চলার ঘটনা ঘটেছিল। তিন বছর আগে শীতলখুচির সেই ঘটনার কথা বার বার লোকসভা ভোটের প্রচারে উঠে এসেছে। কোচবিহারে জনসভায় গিয়ে তা নিয়ে মন্তব্যও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কোচবিহারে গোলমাল হলে তা বরদাস্ত করা হবে না। সমালোচনার নিশানা করেছেন সেখানকার প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশকেও।
শুধু শীতলখুচি নয়, গোটা কোচবিহার জেলা নিয়েই এ বার বাড়তি সতর্ক কমিশন। সেখানে ভোটে নজরদারির জন্য বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। গত শনিবার আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হয়েছে পর্যাপ্ত। সব বুথে থাকবেন সেই বাহিনী। ফলে কোনও অশান্তির ঘটনা যাতে না ঘটে, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তা নিশ্চিত করতে হবে জেলা-কর্তাদের। ভোটের দিন প্রতি ঘণ্টায় রিপোর্ট পাঠাতে হবে কমিশনকে। কমিশনের সূত্রের দাবি, অভিযোগের সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে কোচবিহারই। ফলে সেই জেলাকেই তারা তুলনায় বেশি সংবেদনশীল বলে মনে করছে। তাই সেই জেলা প্রশাসনকে বাড়তি সতর্কও করা হয়েছে।
বাহিনী মোতায়নের পরিকল্পনাতেও তুলনায় বেশি জোর পড়েছে কোচবিহারের উপর। ওই জেলায় ১১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও সাড়ে চার হাজার রাজ্য পুলিশ মোতায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি দু’টি জেলার তুলনায় ওই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। প্রসঙ্গত, আলিপুরদুয়ারে ৬৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে থাকবে ২৪৫৪ জন রাজ্য পুলিশকর্মী। জলপাইগুড়িতে ৭৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ৩০৭৭ জন রাজ্য পুলিশ মোতায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।