—প্রতীকী চিত্র।
বাম সরকার যখন রাজ্যপাটে, সিপিএম-সহ বাম দল ও সংগঠনগুলি পথে, বাড়িতে গিয়ে কৌটো ঝাঁকিয়ে চাঁদা তুলছে, এ ছবি বড্ড চেনা ছিল। ক্ষমতা হারানোর পরেও এই পদ্ধতিতে চাঁদা সংগ্রহ চলত। তবে এখন সময় বদলেছে। পার্টির ভাঁড়ারও ধুঁকছে। তাই লোকসভা ভোটের আগে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইউপিআই-এর মাধ্যমে সমাজ মাধ্যমে অনুদানের আর্জি জানাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএম।
৩০ মার্চ বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি। অ্যাকাউন্ট নম্বর ও মোবাইল নম্বর দিয়ে সেই পোস্টে জানানো হয়ে, ‘অষ্টাদশ লোকসভা ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ মে। চরম আর্থিক সঙ্কট চলছে। ভোট পরিচালনা করতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তাই যথাসাধ্য আর্থিকভাবে পাশে থাকার অনুরোধ জানাই’। সিপিএমের দাবি, পঞ্চায়েত ভোট, ইনসাফ যাত্রা, ইনসাফ বিগ্রেডের মতো কর্মসূচিতে বহু খরচ হয়েছে। তাই চাঁদা তুলে ভোট করা ছাড়া উপায় নেই। নিরঞ্জন মানছেন, ‘‘দলের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। দলের সমর্থকরা যা দেবেন, তাই নিয়ে ভোট হবে। অনলাইনে টাকা দিলে রসিদ পরে দেওয়া হবে।’’ সঙ্গে জুড়ছেন, ‘‘আমরা তো আর বিজেপি, তৃণমূলের মতো ইলেক্টরাল বন্ডে টাকা নিইনি। ’’
আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে সিপিএমের প্রচার। নিজস্ব চিত্র।
সমাজ মাধ্যমে রীতিমতো সক্রিয় সিপিএমের যুব নেতা-নেত্রীরা। দলের প্রচারে এ বার এআই-এর মতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই অর্থ সংগ্রহেও নতুন প্রযুক্তির পথে হাঁটছে দল। সে ডাকে সাড়াও মিলছে। সোমবারই লোকসভা নির্বাচনের জন্য তমলুক কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন নন্দকুমারের অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক চণ্ডীচরণ প্রামাণিক। সকালে সায়ন নন্দকুমার বাজার এলাকায় প্রচারে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা করে ওই টাকা দেন বেতালদিঘি গ্রামের বাসিন্দা চণ্ডীচরণ। তিনি বলছেন, ‘‘নির্বাচনী বন্ডে সবচেয়ে বেশি টাকা নিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলও নিয়েছে। কিন্তু সিপিএম এক পয়সাও নেয়নি। এটা শুনে অবাক হয়েছিলাম। তাই যথাসাধ্য সাহায্য করদিলাম।’’
চণ্ডীচরণ সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনে ছিলেন। তাঁর ছেলে সুদীপও এক সময় এসএফআই করেছেন। এমন পরিবারকে পাশে পেয়ে সায়ন বলেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষের সাহায্য নিয়েই নির্বাচনে লড়াই করব এবং জিতব।’’
বিজেপির কাঁথি জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডলের খোঁচা, ‘‘এরা নিজেদের রাজত্বে কম্পিউটারের বিরোধিতা করেছে। অবশেষে নরেন্দ্র মোদীর ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় ফোন পে, গুগল পে'র ব্যবহার শিখছে।’’ তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডার আবার দাবি, ‘‘ওদের পার্টি ফান্ডে অনেক টাকা আছে। এ ভাবে ভাঁওতা দিচ্ছে। বিজেপিই ওদের আর্থিক সাহায্য করছে।’’