—প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দু’টি দফার চেয়ে সামান্য হলেও ভোট-শতাংশ বাড়ার ইঙ্গিত দিল তৃতীয় পর্বের প্রাথমিক হার। তবেও তাতে বিশেষ আশ্বস্ত হতে পারছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। গো-বলয়ের রাজ্যগুলির মধ্যে মধ্যপ্রদেশে ৬৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু একমাত্র ওই মধ্যপ্রদেশ বাদে বিজেপির গড় উত্তরপ্রদেশ কিংবা গুজরাতে ভোটদানের হারে বিশেষ কোনও উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি।
প্রথম দু’টি দফায় প্রাথমিক ভাবে ৬০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পড়েছিল। যদিও তা পরে বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬ শতাংশে। তুলনায় আজ রাত ১১টা ৪০ পর্যন্ত গোটা দেশের ৯৩টি লোকসভা কেন্দ্রে গড়ে ৬৪.৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে। চূড়ান্ত পরিসংখ্যানে তা প্রথম দু’টি পর্বকে ছাপিয়ে যাবে বলেই মনে করছে নির্বাচন কমিশন। আজ যে ৯৩টি কেন্দ্রে নির্বাচন হয়, তার মধ্যে পাঁচ বছর আগের লোকসভায় বিজেপি জিতেছিল ৭১টি আসনে। এই তালিকায় গুজরাতের ২৬টি আসনও রয়েছে, যার সব ক’টিই গত বার জিতেছিল বিজেপি। ওই ফল ধরে রাখাই এখন বিজেপির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
আজ সকালেই আমদাবাদের নিশান উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে পৌঁছে যান নরেন্দ্র মোদী। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভোট দেওয়ার পরে কিছুটা রাস্তা হেঁটে গিয়ে গাড়িতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। রাস্তার দু’ধারে ভিড় করা জনতার মধ্যে এক দৃষ্টিহীন কিশোরীকে দেখে তার সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান মোদী। প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে তাঁকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে ওই কিশোরী। এক নিরাপত্তারক্ষী আটকাতে গেলে চোখের ইশারায় তাঁকে সরে যেতে বলেন মোদী। ওই কিশোরীর মাথায় হাত রেখে কিছুক্ষণ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর পরে সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আজ তৃতীয় পর্বের ভোটদান। আমাদের দেশে দানের মাহাত্ম্য রয়েছে। সেই কথা মনে রেখে দেশবাসী যেন যথাসম্ভব বেশি করে ভোটদান করেন।’’
প্রধানমন্ত্রী নিজে ভোট দিয়ে ওই আবেদন জানালেও তাঁর নিজের রাজ্য গুজরাতে ভোটের হার ছিল যথেষ্ট কম। দিনের শেষে গুজরাতে ভোট পড়েছে ৫৮.৯৮ শতাংশ। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, গুজরাতে বড় মাপের রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা কম। সুতরাং ভোট কম পড়লেও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। বরং উত্তরপ্রদেশের পরিসংখ্যান প্রথম দু’টি পর্বের মতোই বিজেপিকে অস্বস্তিতে রেখেছে। তৃতীয় পর্বে উত্তরপ্রদেশের যে দশটি আসনে ভোট ছিল, সেই এলাকাগুলি মূলত যাদব-ভূমি বলেই পরিচিত। আজ দশটির মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে বিজেপিকে টক্কর দিতে মাঠে ছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদবের পরিবারের তিন সদস্য। দিনের শেষে উত্তরপ্রদেশে ভোট পড়েছে ৫৭.৩৪ শতাংশ। ফলে এ যাত্রাতেও বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের বড় অংশ বুথমুখী হননি বলে প্রাথমিক বিশ্লেষণের পরে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব।
একই অবস্থা বিহারে। নীতীশ কুমারের রাজ্যে ৫৮.১৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে মধ্যপ্রদেশে ভোটদানের হার এ যাত্রায় ৬৬.০৫ শতাংশ হওয়ায় সেখানে কিছুটা হলেও স্বস্তির হাওয়া বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। দলীয় নেতৃত্বের দাবি, এই দফায় ওই রাজ্যের ৯টি আসনের মধ্যে সবক’টি আসনেই তাঁরা জিততে চলেছেন।