কংগ্রেসের উপর জোট নিয়ে চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা সিপিএম নেতৃত্বের। —ফাইল চিত্র।
আসন্ন লোকসভা ভোটে সিপিএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে জোট নিয়ে অনিশ্চয়তা বহাল রয়েছে এখনও। পশ্চিমবঙ্গে জোট নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি কংগ্রেস হাই কম্যান্ড। তারই মধ্যে কংগ্রেসের উপর পাল্টা চাপ তৈরি করার কৌশল নিলেন বাম নেতৃত্ব।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সোমবার জোট প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের বামফ্রন্টগত ভাবে ৪২টি আসনে প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত। কিন্তু তা প্রকাশ করছি না। কংগ্রেস দ্রুত স্পষ্ট করুক। আমরা আইএসএফের সঙ্গেও কথা বলব। কিন্তু ওদের বলতে হবে ওরা তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে কি না। তবে আর বেশি দিন অপেক্ষা করা যাবে না।”
প্রদেশ কংগ্রেসের এক মুখপাত্রের বক্তব্য, রবিবার নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করে কংগ্রেস নেতৃত্বকে বিষদে জানানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই পুরোটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের জোট হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। সিপিএমের সঙ্গে জোট হবে কি না তা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। রবিবার প্রদেশ কংগ্রেসের নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক জিএ মির ৪২টি কেন্দ্র নিয়েই আলোচনা শুরু করে নেতাদের মতামত জানতে চান। কংগ্রেস সূ্ত্রে খবর, সেই বৈঠকে বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য জোট নিয়ে এআইসিসির অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বৈঠকে মন্তব্য করেন, জোটের আলোচনায় বিলম্ব হওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। তিনি জানান, শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় বামেদের সঙ্গে জোট আলোচনা কিছুটা এগিয়ে নিয়ে গিয়েও থমকে যেতে হয়েছে তাঁকে।
সেই রেশ টেনেই সিপিএমের বক্তব্য, হাতে বেশি সময় নেই। কংগ্রেসকে যা করার তা দ্রুত করতে হবে। একটি সিদ্ধান্তে না আসতে পারলে মুশকিল। সিপিএমের দাবি, এই বিলম্বের ফলে নেতৃত্বকে বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সিপিএম ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় নির্বাচনী সম্মেলন শুরু করে দিয়েছে। সেখানে দলীয় কর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে নেতৃত্বকে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব দ্রুত সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা সেরে জোট নিয়ে যেন একটি সিদ্ধান্তে আসেন।
কংগ্রেসের তরফে গত সপ্তাহ পর্যন্ত তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতার আশা জিইয়ে রাখা হয়েছিল। বার বার বার্তা দেওয়া হচ্ছিল, কথা চলছে, জটের সমাধানসূত্র ঠিকই পাওয়া যাবে। কিন্তু তৃণমূলের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও জোট নয়, পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় এবং অসমে লোকসভা নির্বাচনে একা লড়বে তারা। এর পরেই শতাব্দী-প্রাচীন দলটির উপর চাপ বৃদ্ধি করার কৌশল নিল বামেরাও।