রবিবার এর ভোট প্রচারে এ বিমান বসু ও প্রদীপ ভট্টাচার্য একসাথে পটুয়াতলা লেন এ। — নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে এ বার আর দুই মেরুর নির্বাচন হচ্ছে না। বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের পাশাপাশি লড়াইয়ে আছে বাম ও কংগ্রেসও। এই রাজ্যে এবং অন্যত্রও বাম ও কংগ্রেসের ভোট বাড়বে বলে দাবি করলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।
লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে কলকাতা প্রেস ক্লাবে শুক্রবার ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বিমান বলেছেন, “বাংলায় শুধু দুই মেরুর নির্বাচন হচ্ছে না। সারা দেশেও বামপন্থীদের শক্তি বাড়বে। উত্তর ভারত, পূর্ব ভারতেও বাড়বে। অনেকেই তা ভাবতে পারছেন না। বাংলায় ফলাফল বেরোনোর পরে আপনারাও বলবেন, এই রকম তো ভাবতে পারিনি!” বাম ও কংগ্রেস এ বার আসন সমঝোতা করে লোকসভা ভোটে লড়ছে এ রাজ্যে। বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীদের প্রচারে সাড়া মিলছে। বিমানের দাবি, সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এখন রাজ্যে এসে বামপন্থী এবং কংগ্রেসের সমালোচনা করতে হচ্ছে।
বিমান এ দিন বলেন, “প্রধানমন্ত্রী অমৃতকাল বলছেন প্রচারে। বলছেন ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’। তার নমুনা দেখা যাচ্ছে! মাথাপিছু আয়ে ভারত ২০১৪-য় ১২০টি দেশের মধ্যে ৫৫ নম্বরে ছিল। এখন নেমে গিয়েছে ১১১ নম্বরে। মাত্র ১% মানুষের হাতে দেশের ৪০% সম্পদ। আর নীচের তলার ৫৫% শতাংশের হাতে মাত্র ৩% সম্পদ।” তাঁর সংযোজন, “মুখে রক্ত জমে থাকলে তাকে অসুখ বলে, উন্নয়ন বলে না! উন্নয়ন করতে হলে সম্পদের বন্টন দরকার!” বিমানের ব্যাখ্যা, বিজেপির হাতে দেশ এবং তৃণমূলের শাসনে রাজ্যের অবস্থা ভাল নয়। দু’দলের বিরোধী শক্তির সমাবেশ ঘটিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে দ্বিমেরুর রাজনীতি ভাঙা যায়। তাঁর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘মিথ্যাচার’ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ রাজ্যে তৃণমূলের ইস্তাহারও ‘মিথ্যার ঝুলি’। দুই দলই মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি, তৃণমূলের দুর্নীতি, সন্দেশখালি-প্রসঙ্গ নিয়েও সরব হন বিমান। তাঁর মতে, “প্রথম দু’দফার ভোটের বেশ কয়েক তিন পরে ভোটদানের হার যে বেড়ে গিয়েছে, তা গোনার ভুল হলে এক রকম। কিন্তু যদি দেখা যায় অন্য কায়দায় বৃদ্ধি পেয়েছে, তা হলে ভয়ঙ্কর হবে!”
কলকাতায় প্রচারে এসে বামপন্থীদের শক্তি বাড়ানোর ডাক দেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য ও ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও। যাদবপুর ও কলকাতা দক্ষিণের দুই সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য এবং সায়রা শাহ হালিমের সমর্থনে যুগ্ম সমাবেশে তিনি দাবি করেছেন, বিজেপির জন্য পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী প্রচারে যে সব কথা বলছেন, তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে বিজেপি আশঙ্কায় ভুগছে।