বাম প্রার্থী মনোদীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা দুই তারকা-প্রার্থীর সঙ্গে। একজন তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যজন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। হুগলির বামপ্রার্থী মনোদীপ ঘোষের পরিচিতি শুধুই ‘পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ’। এ ছাড়া আর কোনও তকমা নেই। এই ৫২ বছর বয়সে প্রথম নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন। প্রথমেই ‘বড় মাঠে’। মানছেন, লড়াই কঠিন। কিন্তু পিছিয়ে আসার লোক নন সিপিএমের রাজ্য কমিটির এই সদস্য।
লকেট মূলত এলাকাভিত্তিক জনসংযোগ সারছেন। এক এলাকা থেকে আর এক এলাকায় পৌঁছচ্ছেন গাড়িতে। রচনা এখনও সে ভাবে হেঁটে জনসংযোগ শুরুই করেননি। হুডখোলা গাড়ি চেপে ঘুরছেন। মনোদীপ কিন্তু হেঁটেই বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন। রাস্তায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। পথচলতি শ্রমিক শ্রেণির মানুষ দেখলে জড়িয়ে ধরছেন।
বামপ্রার্থীর কথায়, ‘‘দল আমাকে যোগ্য মনে করেছে, তাই দাঁড় করিয়েছেন। লড়াই কঠিন। তবে, মেহনতি, খেটে খাওয়া মানুষরা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে বিষয়টা উপলব্ধি করতে পারছেন। তাই এই ভোট আমাদের কাছে সম্ভাবনাময়ও বটে।’’
বুধবার, সপ্তগ্রাম বিধানসভা এলাকায় জনসংযোগ সারেন মনোদীপ। সকালে মিঠাপুকুর মোড় থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করেন। মিছিলের সামনে থেকে কখনও পথচলতি মানুষদের দিকে এগিয়ে হাত মেলান, কখনও বা ভ্যানচালককে জড়িয়ে ধরেন। এ দিন ওই এলাকার বিভিন্ন বুথ চষে বেড়ান। বিকেলে ত্রিবেণীতে সভা করেন।
বর্তমানে কেন্দ্র ও রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেই ‘লড়াই কঠিন’ বলে মানছেন মনোদীপ। তাঁর বাড়ি চুঁচুড়ার চাঁপাতলায়। ছাত্রাবস্থা থেকেই বাম রাজনীতিতে হাতেখড়ি। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন। এই প্রথম নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমে প্রচার পর্বে তাঁর উপলব্ধি, ‘‘বেকারত্ব বাড়ছে। বহু মানুষ কাজ খুঁজচ্ছেন। তাঁরা ধর্মীয় বিভেদ বা দুর্নীতি নিয়ে বীতশ্রদ্ধ। তাঁরা শুধু ভাল ভাবে বাঁচতে চাইছেন। একমাত্র বামপন্থীরাই তাঁদের দিশা দেখাতে পারেন।’’
বিজেপি প্রার্থী লকেট অবশ্য তাঁর এই প্রতিদ্বন্দ্বীকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের কর্মীদের বলব, এটা প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াই। সেখানে মোদীজির বিকল্প নেই। তাই, আপনাদের ভোটটা আপনাদের প্রার্থীকে দিয়ে নষ্ট করবেন না।’’
তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সিপিএমের ভোট বিজেপিতে গিয়েছে, তা আগের লোকসভা ও বিধানসভার পরিসংখ্যানে স্পষ্ট। বামেরা আগে 'রামে'র ভোট ফেরত আনুক। তারপর তৃণমূলের সঙ্গে লড়বে।’’