রবিবার রামপুরহাটে সিপিএমের জনজাগরণ সভায় সুজন চক্রবর্তী। সঙ্গে প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম। নিজস্ব চিত্র।
ব্রিগেডে তৃণমূলের জনগর্জন সভার দিন তৃণমূল ও বিজেপিকে বর্জনের ডাক দিয়ে রামপুরহাটে সভা করল সিপিএম।
রবিবার রামপুরহাটের সিপিএমের ডাকা জনজোয়ার সভায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, পলিটব্যুরো সদস্য তথা জেলার প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম, ডিওয়াইএফ নেতা ধ্রুবজ্যোতি সাহা উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূলের জেলবন্দি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম না করে সুজনের কটাক্ষ, ‘‘সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর বীরভূম। উন্নয়ন দাঁড়িয়ে ছিল রাস্তায়। যে মানুষ দাঁড়িয়ে ছিল, সে এখন তিহাড় জেলে গিয়ে শুয়ে পড়েছে।’’ তৃণমূল নেতৃত্ব পাল্টা বলেন, শূন্য হয়ে যাওয়ায় সিপিএম কুৎসা করছে।
এ দিন সভামঞ্চ থেকে তৃণমূলের ব্রিগেডে জনগর্জন সভাকে কটাক্ষ করে সুজন বলেন, ‘‘আজকে কলকাতায় একটা সভা হয়েছে। বলছে জনগর্জন। আসলে জনগর্জন সভা নয় ওটা গণবর্জন সভা। মুখ্যমন্ত্রী বাহিনী নিয়ে র্যাম্পে ফ্যাশন শো করতে করতে চলে গেলেন। কেউ গর্জনও করল না কেউ হাততালিও দিল না।’’
অনুব্রতকে ‘বাঘ’ বলে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। তাকে কটাক্ষ করে সুজন বলেন, ‘‘বাঘেরা এখন খাঁচার মধ্যে। গর্জন কমে গিয়েছে। যত দিন যাবে ওদের গর্জন তত কমবে।’’ সন্দেশখালির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘দিন যত যাবে সন্দেশখালির মায়েরা লাঠি নিয়ে তখন সামনে দাঁড়াবেন। দিন যত যাবে শিবু হাজরা, শাহজাহানরা একেবারে নদী ঝাঁপিয়ে পগার পার হবে।’’
তৃণমূলের ঘোষিত প্রার্থী তালিকা নিয়ে কটাক্ষ করে সুজন বলেন, ‘‘ওরা বলছে জয় বাংলা। যারা বাংলা লিখতে জানেন না, যারা বাঙলা পড়তে জানেন না, যারা বাংলা কথা বলতে জানেন না তাঁদেরকে তো প্রার্থী করে জয় বাংলা স্লোগান দিচ্ছেন।’’
কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকেও আক্রমণ করেন সুজন। তিনি বলেন, ‘‘মোদীজি গ্যারাণ্টি দিয়ে গিয়েছেন। বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনার গ্যারান্টি দিয়েছিলেন। পেরেছেন? দু’লক্ষ বেকার ছেলেকে চাকরি দেওয়ার গ্যারান্টি কোথায়? ১৫ লক্ষ টাকা করে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে দেওয়ার গ্যারান্টিও উধাও। আসলে তৃণমূল আর বিজেপি দুই শাসক দল লুঠেরার দল।’’
সুজনের দাবি, ‘‘বিজেপি যেমন সংবিধান মানে না, জোর করে সরকার গড়তে চায় তেমনই বিজেপির পদাঙ্ক অনুসরণ করে তৃণমূল প্রার্থী তালিকা করেছেন। বিজেপির বিধায়কদের বিধানসভায় ইস্তফা না দিয়ে তৃণমূল প্রার্থী করেছে। আসলে মোদীজির সঙ্গে আলোচনা করে তৃণমূল প্রার্থী করেছে।’’
রামচন্দ্র ডোম, ধ্রুবজ্যোতি সাহা সহ সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষরাও কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতি সহ রাজ্যের শাসক দলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ সর্ব ক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন। রামচন্দ্র ডোম রাজ্যে কাজ না থাকায় জেলায় পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ছে বলে দাবি করেন। লোকসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা আগামী দু-এক দিনের মধ্যে প্রকাশ হবে বলে সুজন জানান।
জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘আসলে ওদের প্রতি বুথে ভোট প্রাপ্তির সংখ্যা হাতেগোনা। জনসমর্থন নেই। পায়ের তলায় মাটি হারিয়ে ওদের এখন কুৎসা রটনাই সম্বল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’