—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
হুগলির তিন কেন্দ্রেই জোরদার প্রচার শুরু করে দিয়েছেন বামপ্রার্থীরা। কিন্তু এতদিন তাঁদের পাশে দেখা যাচ্ছিল না কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের। এ নিয়ে জল্পনা ছিল রাজনৈতিক মহলে। জোটের বাধ্যবাধকতায় মুখে কিছু না বললেও সিপিএমও চিন্তায় ছিল। অবশেষে রবিবার, পয়লা বৈশাখের সকালে আরামবাগের সিপিএম প্রার্থী বিপ্লবকুমার মৈত্রের প্রচারে পা মেলালেন কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। অন্যত্রও প্রচারে কাস্তে-হাতুড়ি-তারার সঙ্গ দেবে হাত, দাবি উভয় দলেরই। শ্রীরামপুরের সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর প্রচারের শুরুতেই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
মান্নান জানান, শনিবার রাতে শ্রীরামপুরে কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব বৈঠকে বসেন। সেখানে সিপিএমের সঙ্গে সহমতের ভিত্তিতে দেওয়াল লিখন, জোরকদমে প্রচার শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয় দলের সব স্তরের নেতাদের। কোন এলাকায় কংগ্রেসের তরফে কোন নেতা সিপিএমের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রচারের বিষয়টি দেখবেন, তাও জানিয়ে দেওয়া হয়। বিরোধীতার প্রশ্নে বিজেপি এবং তৃণমূলকে একই বন্ধনীতে রেখে সিপিএমের সমর্থনে প্রচার করবে কংগ্রেস।
জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘ডানকুনি, উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, তারকেশ্বর, আরামবাগ— সর্বত্রই কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যৌথ প্রচারের জন্য সব প্রস্তুতিই প্রায় চূড়ান্ত।’’
প্রচারে সিপিএম ডাকছে না, আলোচনায় বসছে না বলে আরামবাগে অভিযোগ ছিল কংগ্রেসের। সিপিএমের আরামবাগ জোনাল কার্যালয়ে শুক্রবার দুই দলের বৈঠক হয়। এর পরেই রবিবার এখানে প্রচারে নেমে পড়ে কংগ্রেস। এ দিন বিপ্লবের প্রচার কর্মসূচি এবং জনসংযোগ যাত্রা হয় আরামবাগের মায়াপুর, ধরমপুর এবং কাবলে এলাকায়। মায়াপুর হাটতলায় পথসভা হয়। কর্মসূচিতে ছিলেন কংগ্রেসের যুবনেতা মিরাজুল ইসলাম, দলের আরামবাগ ব্লকের রাজীব গান্ধী পঞ্চায়েতরাজ সংগঠনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ পাল, আরামবাগ শহর কংগ্রেস সভাপতি আনসার
আলি প্রমুখ।
মিরাজুল বলেন, ‘‘আমরা পুরো শক্তি নিয়ে প্রচারে নামছি। মানুষকে বলছি দেশের স্বার্থে অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করতে, ধর্মনিরপক্ষতা বজায় রাখতে আমরা বামপ্রার্থীকে সমর্থন করছি। প্রার্থীকে জেতাতে হবে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য তথা দলের খানাকুল ২ ব্লক সভাপতি নাজির হোসন চৌধুরী জানান, প্রার্থীর প্রচারে থাকার পাশাপাশি নিজেদের দলের তরফেও ছোট ছোট পথসভার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
কংগ্রেসকে পাশে পেয়ে প্রচারে গতি বাড়ল বলে মনে করছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের শরিক দলগুলি আগেই প্রচার শুরু করেছে। এ বার কংগ্রেসও প্রচারে নামায় ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা আরও বেশি মানুষের কাছে যাবে।’’ কংগ্রেসকে প্রচারে ডাকার দেরির অনুযোগ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘জেলা স্তরে আগেই বসা হয়েছে। স্থানীয় স্তরে আমাদের সময় বের করে বসতে কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে প্রচারের সময় যথেষ্ট আছে।’’
সিপিএমের প্রচারে কংগ্রেসের সঙ্গত নিয়ে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যে প্রায় নিশ্চিহ্ন একটি দল আর একটি ক্ষয়িষ্ণু দলের প্রচার করছে। এতে আমাদের ভোটপ্রাপ্তিতে কোনও প্রভাবই পড়বে না।’’ তৃণমূলের ভোটেও ‘কোনও প্রভাব পড়বে না’ বলে দাবি দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি হায়দার আলির।