—প্রতীকী ছবি।
মথুরাপুর আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে সিপিএম। শনিবার সন্ধ্যায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ওই কেন্দ্রে শরৎচন্দ্র হালদারের নাম ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। এই ঘোষণার পরেই কংগ্রেস-সিপিএম জোটে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার ব্যারাকপুর কেন্দ্রে অভিনেতা দেবদূত ঘোষ ও বসিরহাট আসনে নিরাপদ সর্দারকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছে সিপিএম। মথুরাপুর, বসিরহাট ও ব্যারাকপুর— পর পর দু'দিনে এই তিন প্রার্থীর নাম ঘোষণায় ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে বিধান ভবনে। প্রদেশ কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি, কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই ওই আসনগুলিতে একক ভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। যা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। কারণ জোট আলোচনায় ব্যারাকপুর, বসিরহাট ও মথুরাপুর আসনে প্রার্থী দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল কংগ্রেস। এ ক্ষেত্রে জোট শরিকের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই প্রার্থী দেওয়ায় জোটে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। আগামী সোমবার লোকসভা ভোট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৈঠক করবেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মির। সেই বৈঠকে থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। ওই বৈঠকে সিপিএমের একতরফা ভাবে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টিও উত্থাপন করবেন রাজ্যের নেতারা।
পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সংগঠন ইনচার্জ নিলয় প্রামাণিক বলেছেন, “মথুরাপুর আসনে প্রদেশ কংগ্রেস লড়ার সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নিয়ে ফেলেছে। দিল্লির নির্বাচনী কমিটি সেই প্রস্তাব মেনেও নিয়েছে। খুব শীঘ্রই দিল্লি থেকে মথুরাপুর আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে এআইসিসি।”
বিধান ভবন সূত্রে খবর, মথুরাপুর আসনে কংগ্রেস প্রার্থী হতে পারেন প্রাক্তন সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন হালদার। ইতিমধ্যে কংগ্রেস রাজ্যের ১০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। আরও বেশ কিছু আসনে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করবে এআইসিসি। ওই তালিকায় থাকবে উলুবেড়িয়া এবং কাঁথির মতো আসনগুলি। এ ছাড়া কমপক্ষে আরও পাঁচটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার পক্ষপাতী প্রদেশ কংগ্রেস। কারণ, একের পর এক আসনে সিপিএমের প্রার্থী ঘোষণার বিষয়টি প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা জেনেছেন সংবাদমাধ্যম থেকে। যা তাদের কাছে ‘অসম্মানজনক’ ঠেকেছে।
প্রদেশ কংগ্রেসের এক মুখপাত্র জানাচ্ছেন, ব্যারাকপুর, মথুরাপুরের মতো বসিরহাট আসনেও প্রার্থী দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এই আসনগুলি বাদ দিয়ে তুলনামূলক ‘দুর্বল’ উলুবেড়িয়া ও কাঁথির মতো আসন তাদের দিয়েছে সিপিএম। তাই আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও ছয় থেকে সাতটি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে কংগ্রেস। সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু আসনে কংগ্রেস-সিপিএমের মধ্যে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ও হতে পারে বলে মনে করছে বিধান ভবনের একাংশ।
প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের ক্ষোভের বিষয়টি টের পেয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তাই রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর চেষ্টা করছেন বলেই মুজফফর আহমেদ ভবন সূত্রে খবর। ওই সূত্রের দাবি, আইএসএফ জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর আরও অতিরিক্ত কিছু আসন লড়াইয়ের জন্য চেয়েছে কংগ্রেস। তাই আলোচনার মাধ্যমেই পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করার পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলেই মনে করছে সিপিএম।