ফাইল চিত্র।
সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পঞ্জাব যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, ওই দিন দুপুরের বিমানে অমৃতসরের উদ্দেশে রওনা হতে পারেন তিনি। তার আগে কলকাতায় ভাষা দিবসের এক অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন বলেই খবর। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর মমতা দমদম বিমানবন্দর থেকে অমৃতসর রওনা দেবেন।
ঘটনাচক্রে ওই দিনই রাজ্যের ১০০ দিনের কাজ করা ২১ লক্ষ মানুষের অ্যাকাউন্টে অর্থ দেবে রাজ্য সরকার। গত দু’বছর কেন্দ্রীয় সরকার এই খাতে অর্থ না দেওয়ায়, যাঁরা ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করেছিলেন, তাঁদের অর্থ দেওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছিল মমতার দল। এমনকি, সেই অর্থের দাবিতে, দিল্লিতে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছিলেন। তাতেও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের দাবি মানেনি। শেষে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের তহবিল থেকেই সেই ‘বঞ্চিত মানুষ’-দের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছেন। ২১ ফেব্রুয়ারি এক সরকারি অনুষ্ঠানেই সেই অর্থ প্রদানের কাজ শুরু করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অমৃতসর রওনা হওয়ার আগেই সেই অনুষ্ঠান হতে পারে বলেই মনে করছে রাজ্য প্রশাসনের একাংশ।
পঞ্জাব সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কৃষক আন্দোলনে নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে পারেন। তিন কৃষি বিল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কৃষক সমাজের একাংশ যে আন্দোলন করেছিল তাতেও সমর্থন দিয়েছিলেন মমতা। আর এ বার লোকসভা ভোটে পঞ্জাবে গিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন তিনি। পঞ্জাবে বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে আম আদমি পার্টির সরকার। সেখানে গিয়ে মমতা দেখা করতে পারেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সঙ্গেও। এই মূহূর্তে জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের সঙ্গে সবচেয়ে ভাল সম্পর্ক দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের। মঙ্গলবারই অরবিন্দ ঘোষণা করে দিয়েছেন, পঞ্জাবের মতোই দিল্লিতেও কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে না গিয়ে একক ভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটে লড়াই করবেন তাঁরা। বাংলাতেও একই কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী। বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁরা জোট ইন্ডিয়ার শরিক হলেও নিজ নিজ রাজ্যে একক শক্তিতেই লড়াই করবে আপ-তৃণমূল। তাই এই সফরে পঞ্জাবে গিয়ে ভগবন্তের পাশে দাঁড়িয়ে সেই বার্তাই দিতে পারেন মমতা।
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এই সফরে যেতে পারেন স্বর্ণমন্দিরেও। ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁর কলকাতায় ফিরে আসার কথা। মুখ্যমন্ত্রী এই দু’দিনের পঞ্জাব সফরের প্রভাব পড়তে পারে দিল্লির রাজনীতিতেও, তেমনটাই মনে করছেন জাতীয় রাজনীতির কারবারিরা।