দেব। —ফাইল চিত্র।
ভোটের মাঝে ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেবের (দীপক অধিকারী) এক ‘প্রতিনিধি’র বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ আগেই উঠেছে। কলকাতা হাই কোর্টে তা নিয়ে মামলাও হয়। কিন্তু পরে টাকা পেয়ে গিয়েছেন বলে দাবি করে অভিযোগকারীই ‘পিছিয়ে গিয়েছেন’! একই অভিযোগে আবার মামলা হল উচ্চ আদালতে। এ বার শুধু দেবের প্রতিনিধি রামপদ মান্না নন, স্বয়ং দেবের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। মামলাকারীর দাবি, দেব ও তাঁর ‘প্রতিনিধি’র বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সিবিআই তার তদন্ত করুক।
বাপ্পাদিত্য ঘোষ নামে এক ব্যক্তি মামলাটি দায়ের করেছেন। সম্প্রতি ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায় এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি অডিয়ো ক্লিপ পোস্ট করেছিলেন। সেই অডিয়ো ক্লিপটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। ওই ভিডিয়োর কথা উল্লেখ করেই মামলা করেছেন মামলাকারী। তাঁর হয়ে সওয়াল করেছেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।
কয়েক দিন আগেই রামপদের বিরুদ্ধে আশাকর্মী পদে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন ঘাটালের ক্ষীরপাই এলাকার বাসিন্দা গঙ্গেশ সাঁতরা। অভিযোগ করেছিলেন, আশাকর্মী পদে তাঁর মেয়ে মৌসুমি সাঁতরার চাকরির জন্য তিন কিস্তিতে তিনি প্রায় দু’লক্ষ টাকা রামপদকে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই চাকরি হয়নি। পরে টাকাও ফেরত পাননি। সাংসদ প্রতিনিধির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নিয়ে শোরগোল পড়তেই গঙ্গেশ দাবি করেন, চাকরির জন্য দেওয়া ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ফেরত পেয়ে গিয়েছেন। যিনি টাকা নিয়েছিলেন, তিনিই ফেরত দিয়ে গিয়েছেন। ফলে বিষয়টি বেশি দূর এগোয়নি। এর পরেই হিরণের পোস্ট করা একটি ভিডিয়ো আলোচনায় উঠে আসে।
হিরণের পোস্ট করা ফোনালাপের ওই অডিয়ো ক্লিপে এক মহিলা ও এক পুরুষের কণ্ঠ শোনা গিয়েছে। বিজেপি প্রার্থীর দাবি, ওই পুরুষ কণ্ঠটি দেবের। মহিলাকে ফোনে বলতে শোনা গিয়েছে, চাকরির জন্য তাঁর কাছ থেকে ৯ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু চাকরি হয়নি। টাকাও ফেরত পাচ্ছেন না তিনি। হিরণের বক্তব্য ছিল, ‘‘চাকরি দুর্নীতিকাণ্ডের এটা একটা বড়সড় চক্র। যার মাথায় রয়েছেন ঘাটালের বিদায়ী সাংসদ দেব। তাঁর সহযোগী হিসেবে রয়েছেন তাঁরই প্রতিনিধি রামপদ মান্না।’’ এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানিয়েছিলেন হিরণ। বলেছিলেন, ‘‘হাই কোর্টের দ্বারস্থ হব সিবিআই তদন্তের দাবিতে।’’
দেব অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এমন কোনও ফোন আমার কাছে আসেনি। কল রেকর্ড এডিট করা হয়েছে। মহিলার কণ্ঠ লাগানো হয়েছে। সব কিছু নিয়েই অ্যাকশন নেওয়া হবে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন রামপদও।