সেই সব চকলেট। — নিজস্ব চিত্র।
দোলের আবহে একাকার হয়ে আছে নানা রং। আর দক্ষিণ ভারতের এক উপকূল শহরে সব দলের রং মিলে যাচ্ছে চকোলেটে এসে!
আরব সাগরের পাড়ে কোঢ়িকোড় শহরে এখন বায়না সামাল দিতে হাঁপিয়ে উঠছেন আশিকা খাদিজা। ছোট বেলা থেকে তিনি চকোলেটের ভক্ত। পড়াশোনা শেষ করে ছোট বেলার শখকেই পেশা করেছেন। চকোলেট তৈরির ছোট ব্যবসা চালান। কিন্তু চকালেট দুনিয়ায় বড় বড় সংস্থার সঙ্গে এঁটে ওঠার জন্য তাঁর হাতিয়ার প্যাকেজিং। উপহার দেওয়ার জন্য নানা ধরনের মোড়ক এবং প্যাকেজ পাওয়া যায় তাঁর কাছে। সেই সূত্রেই কোঢ়িকোড়ের কারাসেরিতে আশিকার কাছে এখন দল-মত নির্বিশেষে রাজনীতিকদের ভিড়!
চকোলেট তৈরি করে তার মোড়কে প্রার্থীদের ছবি ও প্রতীক বসিয়ে দিচ্ছেন আশিকা। এতেই বাজিমাত! কেরলের ভাডাকারা লোকসভা কেন্দ্রের ইউডিএফ মনোনীত কংগ্রেস প্রার্থী শফি পরমবিলের জন্য প্রথম এমন ছবি ও প্রতীক সংবলিত চকোলেট করে দিয়েছিলেন এই তরুণী। তার পরে ভাডাকারারই সিপিএম প্রার্থী কে কে শৈলজা নিয়ছেন তাঁর দলের প্রতীক মোড়কে থাকা চকোলেট। তার পরে কোট্টয়মের এনডিএ প্রার্থী তুষার ভেল্লাপপল্লি, যিনি গত বার ওয়েনাড়ে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। খবর ছড়িয়ে পড়তে আশিকার সংস্থার কাছে এই বিশেষ চকোলেট চেয়ে অর্ডার দিয়েছেন আলপ্পুঝার কংগ্রেস প্রার্থী এবং এআইসসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালও।
আশিকার কথায়, ‘‘স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার জন্য চকোলেটের ব্যবসা শুরু করেছিলাম। চকোলেট তৈরি নিয়ে পড়াশোনা, গবেষণা সবই করেছি। তবে সাধারণ চকোলেট আমরা করি না, বিশেষ ডিজ়াইন এবং মাপের চকোলেটই অর্ডার অনুযায়ী দিয়ে থাকি। উপহার দেওয়ার জন্য ‘গিফ্ট প্যাক’ করে দিই, নানা উপলক্ষে মানুষ সে সব নিয়ে যান। এ বার ভোটের সময়ে একটা পরীক্ষা চালিয়ে দেখতে চেয়েছি। তাতে এত সাড়া আসছে যে, কুলিয়ে ওঠা মুশকিল হচ্ছে!’’ আশিকার বিশেষ চকোলেটের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে কেরলের বাইরেও। তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, অসমের মতো রাজ্য থেকে এখন বায়না আসতে শুরু করেছে।
তেলঙ্গানায় ১০ জন প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচার দেখভাল করছে, এমন একটি দল কোঢ়িকোড়ে গিয়ে হাজির হয়েছিল আশিকার কাছে। তাদের চাহিদা এক এক জনের জন্য এক হাজার করে চকোলেট। আশিকা অবশ্য তাদের জানিয়েছেন, এই ধরনের বিশেষ মোড়কের চকোলেট কম সময়ে এত বড় সংখ্যায় তৈরি করে দেওয়া মুশকিল!
কংগ্রেস প্রার্থী শফির কথায়, ‘‘ভোটের সময়ে প্রথাগত প্রচারের বাইরে নানা রকমের সামগ্রী আলাদা করে নজর কাড়ে। এই চকোলেটের গিফ্ট প্যাকেজটা ওই এলাকায় ভালই জনপ্রিয়। সেখান থেকে খবর পেয়ে ভোটের প্রচারের জন্য চকোলেটের মোড়ক করে নেওয়ায় বিষয়টা অভিনবত্ব পেয়েছে!’’ সিপিএমের কান্নুর জেলা সম্পাদক এম ভি জয়রাজনের মতে, ব্যাপারটা বেশ মজাদার!
ভোটের ফলে যে-ই জিতুক, আশিকার চকোলেট ব্যবসার এখনই জয়জয়কার!