মুর্শিদাবাদে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ রাজনাথ সিংহের। — ছবি: পিটিআই।
পৃথিবীর কোনও শক্তি ভারতে নাগরিকত্ব আইন চালু হওয়া আটকাতে পারবে না। রবিবার মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির নরসিংহপুর কিশোর সঙ্ঘ ক্লাব ময়দানে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী গৌরীশঙ্কর ঘোষের সমর্থনে প্রচারে এসে এমনই দাবি করলেন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। পাশাপাশি, জনসভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন রাজনাথ। যদিও কংগ্রেস বা ‘ইন্ডিয়া’ নিয়ে খরচ করলেন না একটি শব্দও।
তীব্র গরম ছাপিয়ে বাংলায় লোকসভার লড়াই জমে উঠেছে। এই আবহে মুর্শিদাবাদের জনসভা করতে এলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। আর সভায় দাঁড়িয়ে একের পর এক প্রসঙ্গে বিঁধলেন তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রবিবার জলঙ্গিতে রাজনাথ বলা শুরুই করেন মমতাকে বিঁধে। বলেন, ‘‘বহু বরেণ্য ব্যক্তির জন্মভূমি এই বাংলা। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হতেই এখানে গুন্ডাদের রাজত্ব চালু হয়েছে। ভাল লোকেরা এখানে ভয়ে ভয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। পুরো বাংলায় এখন অরাজকতার পরিবেশ বিরাজ করছে।’’
সন্দেশখালি ইস্যুতেও তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন। রাজনাথ বলেন, ‘‘এই রাজ্যে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকতেও সন্দেশখালির মতো ঘটনা হয়! গোটা দেশের লোক সন্দেশখালির ঘটনা শুনে লজ্জিত। এই রাজ্যে আইনের শাসন নেই। এখানে গুন্ডা-বদমায়েশদের দাপাদাপি দেখতে পাওয়া যায়। এই রাজ্যে বিজেপি সরকারে এলে দেখি কার ক্ষমতা হয় সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটানোর।’’ এর পরেই রাজনাথের প্রশ্ন, ‘‘আপনার নামই তো ‘মমতা’। তা হলে আপনি জনতার দুঃখ দেখতে পান না কেন? আপনার স্বভাব, ব্যবহারে ‘মমতা’ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ রাজনাথ আরও অভিযোগ করেন যে, এই রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্র যে আর্থিক সহায়তা পাঠাচ্ছে তা-ও ঠিকমতো খরচ করা হচ্ছে না বলেও তোপ দাগেন তিনি।
রাজনাথ বলেন, ‘‘যারা ধর্মের জন্য বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো দেশে অত্যাচারিত হয়েছেন, তাঁদের এই দেশে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আমরা একটি আইন করেছি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা-ও চালু করতে দেবেন না। আমি বলে যেতে চাই, মমতাদি আপনার বিদায় নিশ্চিত। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে। আমরা নাগরিকত্ব আইন চালু করবই। পৃথিবীর কোনও শক্তি নাগরিকত্ব আইন আটকাতে পারবে না।’’
প্রসঙ্গত দু’দিন আগেই এই মুর্শিদাবাদের জনসভা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলে গিয়েছেন, তিনি জীবিত থাকতে এ রাজ্যে সিএএ বা এনআরসি হতে দেবেন না। তারই জবাব রবিবার রাজনাথ দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনাথের দাবি, রাজ্যে এ বার লোকসভা ভোটে বিজেপি ৩০টির বেশি আসন পাবে।