কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলের সময় গত পঞ্চায়েত ভোটে ভোলারডাবরি এলাকায় গুলি চালানোর ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন এক বিজেপি সমর্থক। সোমবার আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ন দে।
পঞ্চায়েতে শুধু ছাপ্পা ভোটই পড়েনি, চলেছে গুলিও— টহলে বেরোনো কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সামনে পেয়ে এমনই অভিযোগ করলেন আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের ভোলারডাবরি এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রার্থীর এজেন্টের দায়িত্ব সামলানো এক বিজেপি কর্মী। লোকসভা নির্বাচনে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আর্জিও জানান ওই নেতা। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্র নিয়ে বিজেপির সব স্তরের নেতাই ‘ভয়ে’ রয়েছেন। তাই গেরুয়া শিবিরের তরফে ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, গত পঞ্চায়েত ভোটে দমনপুর আংশিক নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের বুথে গোলমালের কথা মাথায় রেখেই সোমবার সকালে ভোলারডাবরির ওই এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল হয়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “গত পঞ্চায়েত ভোটে ওই বুথে গোলমাল হয়েছিল। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে এলাকায় আর কোনও গোলমালের আশঙ্কা যে নেই, সে ব্যাপারে এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করতেই আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন দ্বিতীয় অসম গেট থেকে শুরু করে ওই এলাকা দিয়েও কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দেয়।”
টহলের সময়ই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের কাছে পঞ্চায়েত ভোটে ওই বুথে গোলমালের কথা জানান বিজেপির কিসান মোর্চার মণ্ডল সহ-সভাপতি প্রহ্লাদ বর্মণ। তাঁর দাবি, “দমনপুর আংশিক নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে পঞ্চায়েত ভোটের দিন আমি দলের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টের কাজ করছিলাম। সন্ধ্যায় স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার নেতৃত্বে ওই বুথ দখল করা হয়। ওই তৃণমূল নেতা পাঁচ রাউন্ড গুলি চালান। তার পরেই বুথে ছাপ্পা ভোট শুরু হয়। এ দিন সকালে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছানো মাত্র তাদের কাছে গিয়ে মৌখিক ভাবে গোটা ঘটনাটি জানাই।” যদিও কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলে নেতৃত্ব দেওয়া আলিপুরদুয়ার জংশন পুলিশ ফাঁড়ির ওসি সুব্রত সরকার এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলের সময় রাস্তার আশপাশে যাঁদের দেখা মিলেছে, তাঁদের সকলের সঙ্গেই কথা বলা হয়েছে।’’
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক মৃদুল গোস্বামীর দাবি, “পঞ্চায়েত ভোটে আলিপুরদুয়ার জেলায় এমন কোনও ঘটনা হয়নি। আসলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে হারের ভয়ে রয়েছেন বিজেপির সর্ব স্তরের জেলা নেতারা। তাই এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।”