চায়ের আড্ডায় তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী (বাঁ দিকে), বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার (মাঝে), আদিবাসী গ্রামে প্রচারে সিপিএম প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত (ডান দিকে) — নিজস্ব চিত্র।
দু’জনের মতাদর্শগত দূরত্ব কয়েকশো যোজন। ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তেই যুযুধান দুই শিবিরের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে বাগ্যুদ্ধও। কিন্তু রবিবারের সকালে বাঁকুড়ায় তৃণমূল এবং বিজেপির দুই প্রার্থীকে মেলাল চায়ের কাপ। পৃথক পৃথক ভাবে হলেও গরম চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিয়ে রবিবাসরীয় প্রচার সারলেন বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার এবং তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী। আদিবাসী গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীদের কাছে সমস্যার কথা শুনলেন বাঁকুড়া লোকসভার বাম প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত।
শনিবার নির্বাচন কমিশন ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে। ষষ্ঠ দফায় আগামী ২৫ মে ভোটগ্রহণ হবে বাঁকুড়া লোকসভায়। তার পরেই প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দলগুলি। রবিবার সাতসকালে কর্মীদের নিয়ে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া ধলডাঙ্গা মোড়ের সব্জি বাজারে হাজির হলেন বিজেপি প্রার্থী সুভাষ। সব্জি বাজারে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার মাঝেই ধলডাঙ্গা মোড়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে চায়ের দোকানে বসে পড়েন সুভাষ। সেখানে বিজেপির ঘোষিত কর্মসূচি ‘চায়ে পে চর্চা’ করেন ওই বিজেপি প্রার্থী। সুভাষ বলেন, ‘‘প্রচারের ফাঁকে একটু চা না হলে চলে নাকি? কর্মীদের নিয়ে একটু চা খেয়ে আবার বেরিয়ে পড়েছি প্রচারে। দেশের প্রধানমন্ত্রী ‘চায়ে পে চর্চা’ কর্মসূচি করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ভোটের মুখে সেই কর্মসূচি এখানেও পালিত হল।’’
রবিবার সাতসকালে চায়ের আড্ডায় খোশমেজাজে দেখা গেল বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অরূপকেও। বাঁকুড়ার ভৈরবস্থান মোড়ে স্থানীয় একটি চায়ের আড্ডায় যোগ দিয়ে চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিয়ে খোশগল্পে মেতে ওঠেন তিনি। অরূপ বলেন, ‘‘চায়ের আড্ডায় বিভিন্ন বয়সের মানুষের সমাগম হয়। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে গল্প জমে ওঠে। তেমনই এক আড্ডায় আমিও যোগ দিলাম। বিভিন্ন বয়সের মানুষের সঙ্গে দেখা হল, কথা বললাম। আমি ছাত্র রাজনীতি করে উঠে এসেছি। তাই বিভিন্ন বয়সের মানুষের সঙ্গে মেশার ক্ষেত্রে আমার কোনও সমস্যা হয়নি।’’
নেতা-কর্মীদের নিয়ে চায়ের আড্ডায় যখন ভোটপ্রচার সারছেন সুভাষ এবং অরূপ তখন বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের আদিবাসী প্রধান কেন্দুয়া গ্রামে বাড়ি বাড়ি ঘুরে জনসংযোগ সারলেন সিপিএম প্রার্থী নীলাঞ্জন। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করেন গ্রামের সমস্যার কথা। নীলাঞ্জন বাঁকুড়ার সাংসদ ও ছাতনার বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, ‘‘২০২৪-এ দাঁড়িয়ে কেন্দুয়ার মতো একটি আদিবাসী গ্রামে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নেই, চলাচলের যোগ্য রাস্তা নেই! এই গ্রাম যেন এক নেই রাজ্য। কেন এমন পরিস্থিতি? এলাকার সাংসদ ও বিধায়কেরা কী করলেন এত দিন?’’