—প্রতীকী চিত্র।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ কার্যকর হওয়ার পরের দিন থেকেই এ নিয়ে প্রচারে নামার প্রস্তুতি শুরু করে দিল গেরুয়া শিবির। ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত গড়বেতা ও শালবনি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে সিএএ নিয়ে প্রচার করবে বিজেপি। তার জন্য হোমওয়ার্ক সেরে নিচ্ছেন পদ্ম কার্যকর্তারা। খোঁচা দিয়ে পাল্টা প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সিএএ কার্যকর হওয়ার পরেই গড়বেতা ও শালবনি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটি মণ্ডলের কার্যকর্তাদের বলে দেওয়া হয়েছে এই নয়া আইন নিয়ে যাতে মানুষ ভুল না বোঝে। সেই মতো প্রতি বুথে, পারলে 'ডোর টু ডোর' গিয়ে মানুষকে সিএএ কী তা বোঝাতে হবে। গড়বেতার এক মণ্ডল সভাপতি বলেন, "রাতে সিএএ চালু হয়েছে। দলের নির্দেশ পেয়ে সকালেই সব সংবাদপত্র কিনে এনে সিএএ নিয়ে যা রিপোর্ট আছে তা কেটে ফাইলবন্দি করেছি। আবার অনলাইনেও তথ্য নিচ্ছি। আসলে সিএএ-র সঠিক ধারণাটা তো মানুষকে দিতে হবে!" বিজেপির কিসানমোর্চার ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি গোয়ালতোড়ের পশুপতি দেবসিংহ বলেন, "সিএএ নিয়ে যথেষ্ট হোমওয়ার্ক করেছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে বোঝানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।" চন্দ্রকোনা রোডের বিজেপি নেতা গৌতম কৌড়ি বলছেন, "তৃণমূল সহ বিরোধীরা সিএএ নিয়ে ভুল প্রচার করছে, আমরা যাতে সঠিক তথ্যটা মানুষকে দিতে পারি, তা হলে বাকিদের বিভ্রান্তিকর প্রচার ধোপে টিকবে না।"
কী ভাবে প্রচার চলছে? বিজেপির এক নেতা বলেন, "সিএএ-র মূল বিষয়টি তথ্য সহ সংক্ষিপ্ত আকারে বাংলায় লিফলেট করে প্রচার তো চলবেই, সেইসাথে মানুষকে গিয়ে বলা হবে এই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার, কেড়ে নেওয়ার নয়।" বিজেপির এসসি মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মদন রুইদাস বলেন, " শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে সিএএ নিয়ে লেখা, তথ্য, অনলাইন পোর্টালে আবেদন কী ভাবে করতে হবে - এসব বিবরণ আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা প্রত্যেক পরিবারে গিয়ে সিএএ-র ব্যাখ্যা দেব। ভোটের আগে যাতে মানুষ ভুল বুঝতে না পারে।"
কার্যকর্তারা বুঝলেও, গ্রামাঞ্চলের অনেক বিজেপি কর্মীই অবশ্য সিএএ বিষয়ে অতটা ওয়াকিবহাল নন। গড়বেতার কয়েকজন পদ্ম কর্মী এ দিন কার্যকর্তাদের ফোন করে জানতে চান এই নয়া আইন নিয়ে। তাঁদের মধ্যে একজন বলেন, "নিজে ভাল ভাবে না বুঝে নিলে মানুষকে গিয়ে কী বোঝাব! মানুষের প্রশ্নের সামনে তো পড়তেই হবে।" বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলার সহ সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলেন, "সমস্ত কার্যকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিএএ নিয়ে প্রচার শুরু করতে। এই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার, কেড়ে নেওয়ার নয়। বিরোধীরা অপপ্রচার করছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের সঠিক প্রচারটা সর্বত্র করতে বলা হয়েছে। তার প্রস্তুতি চলছে।"
বিজেপির সিএএ নিয়ে প্রচার কৌশলকে খোঁচা দিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, "আমাদের এই রাজ্যে সিএএ করতে দেব না। ওরা যতই প্রচার করুক, মানুষের কিছু যায় আসে না। সেরকম হলে বাংলার মানুষ সিএএ - এনআরসি নিয়ে এমন আন্দোলন করবে, যাতে স্বৈরাচারী নরেন্দ্র মোদী আইন রদ করতে বাধ্য হন।"