প্রার্থীর নাম ছাড়াই দেওয়াল লিখন বিজেপির। নিজস্ব চিত্র।
বিপক্ষ দলগুলি প্রার্থী দিয়ে প্রচারে নেমে পড়েছে। আশপাশের কেন্দ্রে নিজেদের দলের প্রার্থীরাও প্রচার সারছেন। কিন্তু আসানসোল কেন্দ্রে এখনও প্রার্থী ঘোষণার অপেক্ষায় বসে বিজেপি নেতা-কর্মীরা। পর পর দু’বার জয় এসেছে যে কেন্দ্রে, সেখানে দল এ বার এখনও প্রার্থীর নাম না জানানোয় খানিক হতাশার সুর বিজেপি কর্মীদের অনেকের গলায়।
ভোট ঘোষণার বেশ কিছু দিন আগেই আসানসোলে বিদায়ী সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হাকে ফের প্রার্থী করার কথা জানিয়ে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের প্রথম প্রার্থিতালিকায় এখানে ভোজপুরি তারকা পবন সিংহের নাম ঘোষণা করেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু তৃণমূল তাঁকে ‘বাঙালি বিরোধী’ বলে সরব হওয়ার পরেই পবন এই কেন্দ্রে প্রার্থী না হওয়ার কথা জানান। এর মধ্যে বামেরা জাহানারা খানকে প্রার্থী করেছে। কিন্তু বিজেপি নতুন প্রার্থীর নাম এখনও জানায়নি।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দল নির্দেশ দিয়েছিল প্রতি বুথে পাঁচটি করে দেওয়াল ‘দখল’ করতে হবে। নেতাদের দাবি, দলের কর্মীরা সেই কাজ করেছেন। পবন সিংহের নাম ঘোষণা হওয়ার পরে তাঁর নামে দেওয়াল লিখনও শুরু হয়েছিল। তিনি সরে দাঁড়াতেই সে সব মুছে ফেলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হতাশ দলের সক্রিয় কর্মীদের বড় অংশ। তাঁদের দাবি, দ্রুত প্রার্থীর নাম ঘোষণা হোক।
আসানসোল জেলা বিজেপির একাংশের দাবি, দলীয় কর্মীরা মনে করছেন, নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেওয়াল লিখন থেকে সভা-সমিতি, সবেই তাঁরা পিছিয়ে যাচ্ছেন। নাম ঘোষণা না হওয়ায় এ সব কাজে তাঁরা উৎসাহ পাচ্ছেন না। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নানা সময়ে নানা জনের নাম রটছে। দলীয় কর্মীদের একটি বড় অংশের দাবি, এমন প্রার্থী দেওয়া হোক যিনি দলীয় কর্মীদের সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়াতে পারবেন।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘তৃণমূল ও বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে আসা-যাওয়ার টানাপড়েনের খেলা চলেই। এ সব কারণে প্রার্থী ঘোষণা করা যাচ্ছে না বলে রটছে। এটা ওদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই এর বেশি মন্তব্য করব না।’’ তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের আবার দাবি, ‘‘ফল কী হবে, তা টের পেয়ে কেউ বিজেপির প্রার্থী হতে রাজি হচ্ছেন না। এক জনের নাম ঘোষণা করলেও তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। সে কারণেই ওদের এই পরিস্থিতি।’’
বিরোধী দলের কথা তাঁরা আমল দিতে চান না জানিয়েও বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক শ্রীদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতেই দ্রুত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার আর্জি জানাচ্ছি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে।’’