—প্রতীকী চিত্র।
ফের প্রকাশ্যে এল বিজেপির ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’। শুক্রবার কুলটির ডিসেরগড়ে আয়োজিত কর্মী সম্মেলন সংগঠনের নিয়ম মেনে হয়নি অভিযোগ তুলে যোগ দিলেন না নেতা-কর্মীদের একাংশ। দেখা পাওয়া যায়নি কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দারকেও। তবে জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, বিবাদের কোনও প্রশ্নই নেই। বিশেষ কাজ থাকায় কেউ কেউ সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তৃণমূল নেতৃত্বের কটাক্ষ, এই দলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই।
এ দিন ডিসেরগড়ে কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আসানসোল কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। সকাল ১১টা নাগাদ শুরু হয় সম্মেলন। সম্মেলন মঞ্চে ছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। দলের একাংশ কর্মীরা জানান, কিন্তু দলের কুলটি বিধানসভা এলাকার প্রথম সারির বহু নেতাই সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও বিধায়ক অজয় উপস্থিত হননি। অগত্যা তাঁকে ছাড়াই সম্মেলন শুরু হয়। এই অবস্থায় ঘণ্টা দুয়েক ধরে কর্মী সম্মেলন হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয় ছাড়াও শক্তি প্রমুখ ও বুথ সভাপতিরাও এ দিন অনুপস্থিত ছিলেন। দলের এক নম্বর মণ্ডল সভাপতি সঞ্জীব ঘোষের অভিযোগ, “বিজেপির একটি সাংগঠনিক পরিকাঠামো আছে। সেই পরিকাঠামো মেনে আজকের সম্মেলন আয়োজন করা হয়নি। তাই আমি ও আমার মণ্ডলের কেউই এতে যোগ দিইনি।” দু’নম্বর মণ্ডল সভাপতি মনোমোহন রায়ের দাবি, “জেলা কমিটির তরফে মণ্ডলগুলির সঙ্গে ঠিক মতো যোগাযোগ করা হয়নি। ফলে অনেক কর্মী সম্মেলের বিষয়ে সময়ে জানতে পারেননি। অনুপস্থিতির এটাই কারণ।” তবে বিধায়ক অজয় বলেন, “আমাকে ডাকা হয়েছিল। শরীর খারাপ থাকায় যেতে পারিনি।” তিনি জানান, কর্মী সম্মেলন নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। দলের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনাটাই মূল লক্ষ্য।
এ দিন কর্মী সম্মেলনে মণ্ডল স্তরের নেতা-কর্মীদের অনুপস্থিতি ও জেলা কমিটির বিরুদ্ধে ওঠা ‘আসন্তোষ’ প্রসঙ্গে দলের আসানসোল সংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রত্যেককেই সংগঠনের নিয়ম মতো খবর দেওয়া হয়েছে। হয়তো কাজ থাকায় কেউ কেউ সম্মেলনে যোগ দিতে পারেননি।” তাঁর দাবি, দলের মধ্যে কোনও অসন্তোষ নেই। তবুও খোঁজ করা হবে। তেমন কোনও পরিস্থিতি হলে নেতা-কর্মীরাই মিটিয়ে নেবেন।
প্রথমে কুলটির কেন্দুয়ায় প্রার্থীকে ঘিরে দলের একদল কার্যকর্তার বিক্ষোভ, বৃহস্পতিবার বারাবনিতে কর্মী সম্মেলনে দুই গোষ্ঠীর মারামারি। ফের ডিসেরগড়ে কর্মী সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের একাংশের অনুপস্থিতি, বার বার দলের এই ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ নির্বাচনে কতটা প্রভাব পড়বে? জিতেন্দ্র বলেন, “বড়ো দল। সকলেই প্রার্থীকে কাছে পেতে চাইছেন। তার মধ্যে একটু আধটু ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। এর বেশি কিছু নয়।” জিতেন্দ্রের দাবি, তৃণমূল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল প্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”
যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মন্তব্য, “বিজেপি দলাটায় কিছু অবশিষ্ট নেই। ছন্নছাড়া হয়ে গিয়েছে। অযথা তৃণমূলকে দোষারোপ করা হচ্ছে।”