প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
মুজরো বিতর্কে অস্বস্তিতে বিজেপি। গত শনিবার পটনার পাটলিপুত্র লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, মুসলিমদের তুষ্টিকরণে বিরোধীরা মুজরো পর্যন্ত করতে পারেন। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে আজ দলের পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, বিরোধী জোট মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের সমর্থন পেতে তাঁদের সামনে মাথা নত করতেও পিছপা নয়, ‘মুজরো করা’ বলতে এ কথাই বোঝাতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
গত শনিবার পটনার পাটলিপুত্র কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী রামকৃপাল যাদবের সমর্থনে জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিরোধীদের মুজরো শিল্পীদের সঙ্গে তুলনা করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী ইন্ডিয়া জোট সংখ্যালঘুদের গোলামি করার পাশাপাশি মুসলিম ভোটকে পাশে পেতে মুজরো পর্যন্ত করতে পারে।’’ প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা এক জন ব্যক্তি কী ভাবে বিরোধীদের সম্পর্কে এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন তা নিয়ে সে দিনই প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনায় সরব হন অন্য বিরোধী দলের নেতারা। আজ হায়দরাবাদের এমআইএম দলের নেতা আসাদ্দুদিন ওয়েইসি মুজরো প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘‘আপনি মুজরোর কথা বলছেন। কিন্তু চিন গত তিন বছর ধরে ভারতের দু’হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি কব্জা করে বসে থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁদের হটানো হচ্ছে না মোদীজি? আপনি কি চিনের সঙ্গে ডিস্কো ড্যান্স করছেন?’’
প্রধানমন্ত্রীর মুজরো মন্তব্য যে শালীনতার সব গন্ডি ছাপিয়ে গিয়েছে তা ঘরোয়া ভাবে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। তাই আজ দলের পক্ষ থেকে বিষয়টির ব্যাখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিরোধী নেতা-নেত্রীরা কী ভাবে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে কু-কথা বলেছেন তাও তুলে ধরা হয়। এ প্রসঙ্গে আজ দলের মুখপাত্র শেহজাদ পুনেওয়ালা বলেন, ‘‘মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের সমর্থন পেতে বিরোধীরা যে সংখ্যালঘুদের সামনে মাথা নত করতে পিছপা নন, সেটাই বোঝাতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই একই শব্দ ইন্ডিয়া জোটের নেতা উদ্ধব ঠাকরে তাঁর প্রতিপক্ষ এনডিএ শিবিরের নেতা একনাথ শিন্ডে সম্পর্কে বলেছিলেন। তখন এ নিয়ে কোনও প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা যায়নি। মল্লিকার্জুন খড়্গে প্রধানমন্ত্রীকে বিষের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, তাঁর দলের নেতারা বলেছিলেন মোদীর মৃত্যু হবে হিটলারের মতো। তখন এই সব নেতারা নীরব ছিলেন। কারণ মোদীকে অপশব্দ বলা এঁরা পছন্দ করেন। তাই তখন কোনও প্রতিবাদের স্বর শোনা যায়নি কোনও শিবির থেকে।’’