দেবের বিরুদ্ধে পোস্টার বিজেপি বিধায়কের। খড়ারে। নিজস্ব চিত্র —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে গিয়ে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তার আগেই স্কুলের একাংশ ভেঙে গিয়েছিল। পড়ুয়াদের নিরাপত্তাজনিত কারণে স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ করে অন্যত্র চলছে স্কুল। তার পরেও খড়ার বালিকা বিদ্যালয়ের জন্য তাঁর সাংসদ কোটা থেকে টাকা বরাদ্দ হয়নি বলে অভিযোগ। ভোটের আবহে ঘাটালের বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবের বিরুদ্ধে পোস্টার সেঁটে পথে নামল বিজেপি। ভোটের আগে বিজেপির ওই পোস্টারে আতান্তরে পড়েছে শাসক তৃণমূলও।
গত বছর অক্টোবর মাসে বন্যা পরিদর্শনে ঘাটালে এসে খড়ার বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন দেব। তার কিছুদিন আগেই খড়ার শহরের ওই বালিকা বিদ্যালয়ের একাংশ ভেঙে পড়েছিল। তাতে কেউ হতাহত না হলেও পড়ুয়াদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। সেই খবর শুনেই ঘাটালে বন্যা পরিদর্শন করে খড়ার ছুটে গিয়েছিলেন দেব।তখনও ওই স্কুলেই চলছিল পঠনপাঠন। দেব নিজে গিয়ে তাঁর সাংসদ কোটা থেকে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। গত বছর পুজোর পরই বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিরাপত্তার কারণে পঠনপাঠন খড়ার বয়েজ স্কুলে স্থানান্তরিত করা হয়। এখনও সেখানেই চলছে স্কুল। সকালের দিকে মাত্র সাড়ে তিন ঘন্টা সময়ের মধ্যেই স্কুলের ক্লাস শেষ করে ছুটি দিয়ে দিতে হয় পড়ুয়াদের। এখনও স্কুলের নতুন ভবনও তৈরি হয়নি।
টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় এলাকায় স্থানীয় স্তরে জোর আলোচনা শুরু হয়েছিল। ভোটের প্রচার শুরু হতেই দেবের প্রতিশ্রুতিকে হাতিয়ার করে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির।দু’দিন আগেই দেব ঘাটালের উত্তর অংশে প্রচারে গিয়েছিলেন। খড়ার শহরেও প্রচার করেছিলেন। রাতে খড়ারের দলপতিপুরেই ছিলেন। তবে নির্ঘন্ট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় খড়ার বালিকা বিদ্যালয়ে টাকা বরাদ্দ নিয়ে দেবকে কোনও শব্দ খরচ করতে দেখা যায়নি। তবে দেব খড়ার থেকে ফিরতেই সেখানে শহর জুড়ে পোস্টার সাঁটল পদ্ম শিবির। পোস্টারে বিজেপির দাবি, ‘খড়ার গার্লস স্কুলকে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলে, সেই টাকার কাটমানি চাওয়া হল কেন,সাংসদবাবু জবাব দাও’। তারসঙ্গে লেখা রয়েছে, ‘আর প্রতিশ্রুতি নয়। হিরণ জেতার তিন মাসের মধ্যে খড়ার বালিকা বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে’। খড়ার জুড়ে পোস্টার সাঁটা ছাড়াও সমাজমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির।
ঘাটালের বিজেপির বিধায়ক শীতল কপাটের অভিযোগ, “দেব কতটা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয়, খড়ার বালিকা বিদ্যালয় তার বড় উদাহরণ। স্কুলে গিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তার পরেও স্কুলকে টাকা না দিয়ে শুধু আলো বসাচ্ছে।” তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, “স্কুলে জমি নিয়ে একটা জটিলতা রয়েছে। কোথায় ভবন হবে, তা নিয়ে সমস্যা থাকায় বিষয়টি আটকে আছে। আর কিছুই নয়।” আশিস বলেন, “আসলে খড়ারে বিজেপির সঙ্গে মানুষ নেই।তাই বাজার গরম করার জন্য বিজেপি এই সব মিথ্যা প্রচারে নেমেছে।” স্কুলের টিআইসি রেশমি চক্রবর্তী বলেন, “সাংসদ যখন বলেছেন, তখন নিশ্চয়ই টাকা বরাদ্দ হবে। স্কুলের ক্লাস রুম জরুরি। স্কুল অপেক্ষায় আছে।”