(বাঁ দিকে) হিরণের গাড়ির সামনে বিক্ষোভ। গাড়িতে বসে হিরণ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
দফায় দফায় বিক্ষোভে কেশপুর বিধানসভা এলাকাতেই দীর্ঘ ক্ষণ আটকে রইলেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। কখনও পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ালেন, কখনও গাড়িতে বসে ঘর্মাক্ত মুখে তৃণমূল প্রার্থী দেব এবং তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন বিজেপি প্রার্থী।
গত লোকসভা ভোটে কেশপুর বিধানসভা থেকে বড় লিড পেয়েছিলেন তৃণমূলের দেব। শনিবার সেই কেশপুরে বিজেপি এজেন্টদের বুথ থেকে বার করে দেওয়া হচ্ছে শুনে সেখানে গিয়েছিলেন হিরণ। কিন্তু কেশপুরের বিভিন্ন বুথের সামনে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। কোথাও তাঁর রাস্তা আটকে গাড়ির সামনে খড় জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দিলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। কোথাও উঠল ‘গো ব্যাক! গো ব্যাক হিরণ’ স্লোগান। এক সময়ে গাড়িতে বসে হিরণ অভিযোগের সুরে বললেন, ‘‘কেশপুরকে পাকিস্তান করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ আক্রমণ করলেন দেবকেও। অন্য দিকে, তৃণমূল প্রার্থী জানালেন, যে কোনও দলের প্রার্থী যে কোনও বুথে যেতে পারেন। সেই অধিকার তাঁর রয়েছে।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে ভোটের শুরুতেই প্রশ্ন তুলেছিলেন হিরণ। বেলা যত গড়িয়েছে, পুলিশের সঙ্গে সংঘাতও তত তীব্র হয়েছে ঘাটালের বিজেপি প্রার্থীর। ঘাটালের আনন্দপুরে স্থানীয়দের সঙ্গেও এক বার কথা কাটাকাটি হয় হিরণের। স্থানীয়দের অভিযোগ, হিরণ এসে গোলমাল বাধিয়েছেন। স্বাভাবিক ভোটদানে বাধা সৃষ্টি করছেন। দিচ্ছেন বলে তার পর এক পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গেও বচসায় জড়াতে দেখা যায় হিরণকে। শনিবার ষষ্ঠ দফায় ভোটগ্রহণের দিন ঘাটালের কেশপুরে দেখা গিয়েছে এমনই সব ছবি।
ভোটের আগের রাত থেকে কেশপুর, আনন্দপুরে বোমাবাজি হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘুমিয়ে কাটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন হিরণ। তবে শনিবার প্রোটোকল ভেঙে বেশি সংখ্যক গাড়ি নিয়ে এগোনোর অভিযোগও ওঠে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে। হিরণের সঙ্গীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের আক্রমণ করা হচ্ছে। যেখানে-সেখানে ইটবৃষ্টির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। দুপুরে কেশপুরের মুখবাসন গ্রামে আবার হিরণকে দেখেই তাঁর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান কয়েক জন। বিজেপির দাবি, বিক্ষোভকারীরা সকলে তৃণমূলের। তাঁরা হিরণকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেন। রাস্তায় খড় ফেলে আগুন ধরিয়ে লাঠি নিয়ে খেলতে দেখা গিয়েছে কাউকে কাউকে। অন্য দিকে, গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, বিজেপি প্রার্থী এলাকায় ‘সন্ত্রাস’ সৃষ্টি করছেন। গত কাল (শুক্রবার) রাতে বিজেপি কর্মীদের পাঠিয়ে গ্রামবাসীদের উপর হামলা করিয়েছেন বলেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। তাঁরা জানান, এই কারণেই এলাকায় হিরণকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। প্রায় ঘণ্টাখানেক গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে আটকে থাকে হিরণের কনভয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়।