গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ যেন ভোটের সময় নিজের বুথ এলাকার বাইরে বেরোতে না পারেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে এই মর্মে আর্জি জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। যদিও রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন পাল্টা নিশীথের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, তিনি নিজেই আক্রান্ত হচ্ছেন।
কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে নিশীথ লেখেন, ‘‘আপনারা জানেন যে উদয়ন গুহই যাবতীয় গুন্ডামির মূল হোতা। নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও প্রশাসনের অনুমতিক্রমে করা র্যালিতেই আমাকে দু’বার আক্রমণ করেছেন।’’ ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর অশান্তির প্রসঙ্গ উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে উদয়নের নামের উল্লেখ ছিল। উদয়নের ‘হেট স্পিচ’ বা ঘৃণাভাষণের জন্য বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে এবং তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হিংসায় উদ্বুদ্ধ করছেন উদয়ন। এমনকি, চিঠিতে নিশীথ উদয়ন সম্পর্কে লিখেছেন, ‘‘উনি তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের মধ্যে ঘৃণাভাষণের জন্য বিখ্যাত।’’
নিশীথের অভিযোগ, উদয়নের বিধানসভা এলাকা দিনহাটায় একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। ভোটের সময় তাঁর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ-না করলে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হবে না। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকেই উদয়ন বিজেপি কর্মীদের নানা রকম ভাবে অসুবিধায় ফেলছেন। তাই আগামী ১৯ মে, কোচবিহার লোকসভায় ভোটের দিন উদয়নের গতিবিধি বেঁধে দেওয়া হোক তাঁর বুথের মধ্যেই।
অন্য দিকে, কমিশনকে পাঠানো নিশীথের এই চিঠি প্রসঙ্গে তীব্র কটাক্ষ করেছেন উদয়ন। তাঁর দাবি, ভোটঘোষণার পর থেকে তাঁকেই একাধিক বার আক্রান্ত হতে হয়েছে। তাঁর উপর হামলা হয়েছে। উদয়নের মন্তব্য, ‘‘আসলে ওঁর (নিশীথ) পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। সেটা বুঝে এখন এমন অবান্তর সব অভিযোগ করছেন।’’ পাল্টা উদয়নের অভিযোগ, দিনহাটা-সহ কোচবিহারের যত্রতত্র অশান্তির জন্য দায়ী বিজেপি। আর সেটা হচ্ছে নিশীথের প্ররোচনাতেই। আনন্দবাজার অনলাইনকে উদয়ন বলেন, ‘‘আসলে আমিও চাই আমাকে গৃহবন্দি করুক। তার প্রতিক্রিয়াটা কী হয় দেখতে পাবে ওরা। আসলে এ সব করে ভোট লুটের পরিকল্পনা হচ্ছে। কারণ, আমি উপস্থিত থাকলে এ সব হবে না। তবে ভয় নেই, ভোটের দিন হাজার উদয়ন গুহ রাস্তায় থাকবে।’’ সব মিলিয়ে ভোটের আগে কোচবিহারের রাজনৈতিক শিবিরে উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে।