(বাঁ দিকে) কালনায় অসীম সরকার। কদম্বা গ্রামে শর্মিলা (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
এক জন কর্মীদের সঙ্গে পাত পেড়ে খেলেন। হাতা-বালতি ধরে খাবার পরিবেশন করলেন। আর তাঁর অন্যতম প্রতিপক্ষ ভোটের প্রচার করলেন বাছাই করা শব্দে তৈরি ছড়া আর গানে। প্রথম জন বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকার। দ্বিতীয় জন ওই কেন্দ্রেরই বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার।
বুধবার কালনা ২ ব্লকের কদম্বায় প্রচারে আসেন শর্মিলা। কালনা ২ ব্লকে বারডেলিয়া গ্রামের মন্দিরে পুজো দিয়ে শুরু হয় তাঁর প্রচার। বৈদ্যপুর রাধারানি সিনেমা হল চত্বরে চা-চক্রে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন। সিঙেরকোনে করেন কর্মিসভা। সেখানে ছিলেন পঞ্চায়েত সদস্য এবং বুথ স্তরের নেতা-নেত্রীরা। সেই সভায় রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি তুলে ধরে প্রচারের নির্দেশ দেন কর্মীদের। সভা শেষে শর্মিলা যান কদম্বা গ্রামে। সেখানে বারোয়ারিতলায় ছোট সভা করেন। তাতে হাজির ছিলেন অনেক মহিলা, দাবি তৃণমূলের। সেখানে শর্মিলা বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। মুখ্যমন্ত্রী কথা রাখেন। রাজ্য সরকার আগে অনেক প্রকল্প
চালু করেছে, পরে কেন্দ্র সেগুলি অনুকরণ করেছে।’’
সভাস্থলের অদূরে প্রার্থী ও দলের নেতা-কর্মীদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, পোস্ত, ডিমের তরকারি। সেখানে কর্মীদের সঙ্গে বসে খাবার খান শর্মিলা। আবার হাতা-বালতি নিয়ে খাবার পরিবেশনও করেন। শর্মিলার কথায়, ‘‘যেখানে যাচ্ছি, সেখানেই সব মানুষ আমাকে আপন করে নিচ্ছেন। আমি ওঁদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছি। কর্মীদের বলেছি, সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রচার করে গেলে জয় নিশ্চিত।’’ এ দিন তৃণমূল প্রার্থী গিয়েছিলেন আগ্রদহ গ্রামে। সেখানে সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ নেন। পরে তেহাট্টা গ্রামে প্রচার সেরে তিনি যান কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের গোপেশ্বর মন্দিরে। সেখানে পুজো দিয়ে কয়েকটি ছোট সভা করেন। প্রচার শেষ হয় তালবোনা গ্রামে।
অন্য দিকে, এ দিন সকালে বিজেপি প্রার্থী অসীম প্রচার করেন কালনা শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। কালনা আদালতের আইনজীবী শুভাশিস হালদারের বাড়িতে বৈঠক করেন।
তার পরে যান সুবর্ণনগর কলোনি এলাকার একটি মন্দিরে। বিকেলে লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে থাকা ৩৬টি মণ্ডলের সভাপতিদের নিয়ে মহিষমর্দিনীতলা এলাকার বৈঠক করেন অসীম। এ দিনও বিজেপি প্রার্থীর গলায় মাঝেমধ্যে শোনা গিয়েছে ছন্দবদ্ধ বাক্যে ছড়া ও স্বরচিত গান। খালি গলায় গেয়েছেন— ‘মনে ভাবো আমি কত হনুরে / তোমার সব ভাবনা লুপ্ত হবে / যে দিন জীর্ণ হবে তনুরে’। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে খোঁচা দিয়েও ছড়া বেঁধেছেন তিনি।
অসীমের প্রচারের এই পন্থা নিয়ে শর্মিলার মন্তব্য, ‘‘আমি গান জানি না। উনি বয়স্ক ভদ্রলোক। তবে উনি যে ভাবে প্রচার করছেন, তাতে আমারই জনপ্রিয়তা বাড়ছে।’’