প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
দেশে লোকসভা ভোটের ফল বেরোনর আবহেই ফের পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের তোপের মুখে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এ দেশের বেশির ভাগ বুথ-ফেরত সমীক্ষাই যখন তৃতীয় বারের জন্য মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়া কার্যত নিশ্চিত বলে রায় দিয়েছে, তখনই মোদীর ভারতে সংবাদমাধ্যমের উপরে নিষেধাজ্ঞা বা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরব জনপ্রিয় ব্রিটিশ-আমেরিকান কমেডিয়ান জন অলিভার। তাঁর টিভি শোয়ের ‘ইন্ডিয়ান ইলেকশনস, ট্রাম্প অ্যান্ড রেড লবস্টার’-শীর্ষক সাম্প্রতিক এপিসোডটি এখনও এ দেশে খোলা যাচ্ছে না। তা বৃহস্পতিবার ভারতের ইউটিউবে সম্প্রচারিত হওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানা যাচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আদৌ ভারতে সম্প্রচারের ছাড়পত্র পাবে কি না, তা নিয়ে নেটমাধ্যমে জল্পনা শুরু হয়েছে।
এ দেশে এইচবিও চ্যানেলের সম্প্রচার শরিক জিয়ো সিনেমায় অলিভারের নতুন পর্বটি আসার কথা। ঠিক এক মাস আগে লোকসভা ভোটের প্রচার তুঙ্গে থাকাকালীন তারা অলিভারের শো ‘লাস্ট উইক টুনাইট উইথ জন অলিভার’-এর ২০২০র একটি পর্ব সরিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। তাতেও মোদীর হাতে ভারতীয় গণতন্ত্রের দুরবস্থার অভিযোগে অলিভার সরব হয়েছিলেন।
নতুন পর্বটির একটি টুকরোয় দেখা যাচ্ছে, অলিভার ভারতে ওই পর্বটির সম্প্রচার আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এনডিটিভি-র বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পদক্ষেপ বা ২০২০র দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষের পরে মালয়ালম সংবাদ চ্যানেল মিডিয়াওয়ান নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গও এ বার তুলেছেন অলিভার। এবং তাঁর ব্যাখ্যা, “ভারতে সংবাদমাধ্যমের উপরে মোদীর হামলায় পরিষ্কার, ২০২০ সালে হটস্টার কেন আমাদের তৈরি মোদীর সমালোচনামূলক পর্বটি ভারতে নিষিদ্ধ করেছিল।”
অলিভার অতীতে গুজরাত সংঘর্ষে মোদীর ভূমিকা থেকে ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনে মুসলিমদের বঞ্চিত করার চক্রান্তের তত্ত্ব নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁর নতুন পর্বটি ট্রাম্পের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে শুরু হয়ে ভারতে টিভি সাংবাদিকদের নিরুপায় হয়ে ডিজিটাল পরিসরে সরে যাওয়ার প্রসঙ্গে ঢুকেছে। এবং এ দেশে ডিজিটাল পরিসর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার কথাও বলেছে। মোদী-শিবির অবশ্য বার বারই পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমে মোদীর সমালোচনা এক ধরনের ভারত-বিদ্বেষ বা ভারতকে নিয়ন্ত্রণ করতে না-পারার হতাশা বলেসাব্যস্ত করে।
এ সব বিতর্ক চলতে চলতেই অলিভারের শোয়ের অংশবিশেষ এ দেশেও নেট-মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন পর্বে অলিভারের কটাক্ষ, যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেন থেকে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের দেশে ফেরানোর ছবি দেখিয়ে ভারতে বলা হচ্ছে, মোদী যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছিলেন! এটা একটু বেশি বাড়াবাড়ি হল না? সমাজমাধ্যমে এই নিয়েও ঠাট্টার সুর।