(বাঁ দিকে) বাবুল সুপ্রিয়। মিঠুন চক্রবর্তী ( ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
এক সময়ে আসানসোলের সাংসদ হয়েছিলেন বিজেপির টিকিটে জিতে। হয়েছিলেন কেন্দ্রের মন্ত্রীও। পরে পদ্মশিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সেই বাবুল সুপ্রিয় আবার ফিরলেন তাঁর পুরনো ‘জমি’ আসানসোলে। সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হার হয়ে ভোটপ্রচারে। অন্য দিকে, রবিবার আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়ার সমর্থনে ভোটপ্রচার করলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। ঘটনাচক্রে, তিনি আবার তৃণমূলে ছিলেন এক সময়ে। রাজ্যসভার সাংসদও হয়েছিলেন। রবিবার এই দুই তারকার ভোটপ্রচার দেখল পশ্চিম বর্ধমান শিল্পাঞ্চলের এই লোকসভা কেন্দ্র।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে আসানসোলে জিতে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রথম জমানায় মন্ত্রী হয়েছিলেন বাবুল। এর পর তাঁকে ২০১৯ সালের ভোটেও আসানসোল থেকে বাবুল জিতেছিলেন। আবার মন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পরেই বাবুলের মন্ত্রিত্ব চলে যায়। এর পরেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন গায়ক। সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দেন। পরে বাবুলকে বালিগঞ্জে উপনির্বাচনে জিতিয়ে এনে রাজ্যের মন্ত্রী করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শত্রুঘ্নকে প্রার্থী করে জেতে তৃণমূল। সেই শত্রুঘ্নের প্রচারে এ বার বাবুল গেলেন। তিনি তৃণমূলের তারক-প্রচারকও।
বারাবনি বিধানসভার অন্তর্গত সালানপুর ব্লকের দেশবন্ধু পার্ক থেকে কল্যানগ্রাম হয়ে কল্যা ঢেঁড়সপুর পর্যন্ত রোড শো করেন বাবুল। হুডখোলা গাড়িতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন বারাবনি বিধায়ক তথা আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায়। কিন্তু ভোটপ্রচারে দেখা যায়নি শত্রুঘ্নকে। তাঁর প্রচারের দিনে মিঠুনের আসানসোলে আসা নিয়ে বাবুল বলেন, ‘‘মিঠুন চক্রবর্তীকে মানুষ দেখতে গিয়েছিলেন। কারণ উনি বড় মাপের অভিনেতা। তবে এই ভিড়ে রাজনৈতিক হিসাব মিলবে না।’’
রবিবার আসানসোলে রোড শো ও জনসভা দুই-ই করেন মিঠুন। বুধা মাঠ থেকে এসবি গড়াই রোড হয়ে মহিষিলা কলোনিতে শেষ হয় তাঁর রোড শো। পরে জনসভা করেন জামুরিয়ায়। সেই জনসভা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে নিশানা করেন মিঠুন। বলেন, ‘‘মমতা আমাকে বলেছেন বহিরাগত। এখন ওঁর ওখানে দেখুন সব ভূমিপুত্র ভূমি থেকে ফুঁড়ে ফুঁড়ে উঠছে উপরে। ওঁর কাছ থেকে আমি কেন রাজনীতি শিখতে যাব? আমি ১৮ বছর বয়স থেকে রাজনীতি করছি। আমি ছাত্র পরিষদের উইনিং ক্যান্ডিডেট। আমি ওঁর কথায় এমপি (সাংসদ) হইনি। উনি একবার অনেক চেষ্টা করেছিলেন। আমি হইনি। আমি না বলে দিয়েছিলাম। আমি কেন যোগদান করেছিলাম ওই দলে, আবার কেন ওই দল ছাড়লাম, তার জন্য এক দিন লাগবে পুরো গল্প শুনতে।’’
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রসঙ্গে মিঠুন বলেন, ‘‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যে ধুতি ও পাঞ্জাবিটা পড়েন, তাতে কেউ একটা কালি ছেটাতে পারবেন না। ওঁর মতো মানুষ হন না। ওঁর নামে কেউ কিছু বলবেন না।’’