সিএএ বিরোধী প্রচারে অসমের রিপন দাস। — নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোট ঘোষণার আগেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সিএএ (নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন)-এর বিধি কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। তার পর থেকেই তৃণমূলের সর্ব স্তরের নেতারা ভোট প্রচারে সিএএ নিয়ে কড়া ভাষায় আক্রমণ করছেন। চুপ করে নেই বিজেপিও। সব মিলিয়ে লোকসভা ভোটের আগে মতুয়া প্রধান বনগাঁ আসনে সিএএ নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের প্রচারে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিবেশ।
এই আবহে এ বার যুক্ত হয়েছেন অসমের যুবক রিপন দাস। তিনি বনগাঁ লোকসভা জুড়ে সিএএ বিরোধী সভা করছেন তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে। মানুষকে বলছেন, তাঁরা সিএএ-তে যেন আবেদন না করেন। রিপনের কথায়, ‘‘এনআরসি’র ফলে আমি, আমার পরিবারের সদস্যের নাম কাটা যায়। আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। এনআরসি ১৩ লক্ষ হিন্দু বাঙালির জীবন শেষ করে দিয়েছে। কেউ ডিটেনশন ক্যাম্পে আছে, কারও আধার কার্ড বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’
রিপনের দাবি, মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে তিনি এ রাজ্যে এসেছেন। রিপনের কথায়, ‘‘আমি চাই না অসমের পরিস্থিতি এই বাংলায় আসুক। এটা মনে রাখা প্রয়োজন, সিএএ-র মাধ্যমে কোনও বাঙালি হিন্দু নাগরিকত্ব পাবে না।’’ বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুরকে সঙ্গে নিয়ে রিপন সকলের কাছে আবেদন করছেন। প্রচারে রিপনকে রাখার কারণ হিসেবে রাজনৈতিক মহলের মত, তৃণমূল নেতাদের মুখ থেকে সিএএ বিরোধী প্রচার সাধারণ মানুষ যতটা না গ্রহণ করবেন, তার থেকে অসমের ‘ভুক্তভোগী’ যুবকের কথা মানুষের কাছে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হবে। কারণ, অসমে এনআরসি নিয়ে এ রাজ্যের বাঙালিদের মধ্যেও কৌতূহল রয়েছে।
যদিও রিপনের প্রচারকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির দাবি, সিএএ’তে আবেদন করলে কারও নাগরিকত্ব যাবে না। কোনও ভারতীয় পরিচয়পত্র বাতিল হবে না। সিএএ নাগরিকত্ব দেয়, নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় না। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘বনগাঁ লোকসভায় পরাজয়ের আতঙ্ক থেকে তৃণমূল অসম থেকে পাগল-ছাগল ধরে আনছে। এতে কোনও লাভ হবে না। মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষেরা জানেন বিজেপি তাঁদের নাগরিকত্ব দিচ্ছে।’’
তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘রিপনকে আমরা ডেকে আনিনি। এনআরসি-র ফলে তিনি তাঁর প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। নিজের মানসিক যন্ত্রণা থেকে এখানে এসেছেন। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন মাত্র। তিনি নিজের মতো করে নিজের কথা বলছেন।’’