(বাঁ দিকে) ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এবং দিল্লির মুখ্য়মন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
জামিনে মুক্ত হয়ে জেল থেকে বেরিয়েই একাধিক ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। পাশাপাশি তিনি এ-ও ব্যাখ্যা করেন, কেন তিনি গ্রেফতার হয়েও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি। কেজরীওয়ালের আরও দাবি, হেমন্ত সোরেনের উচিত হয়নি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া।
কেজরীওয়াল এবং সোরেন দু’জনেই গ্রেফতার ইডির হাতে। দিল্লির আবগারি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রথম জন। দ্বিতীয় জনকে ইডি গ্রেফতার করেছিল জমি কেলেঙ্কারি মামলায়। গ্রেফতার হওয়ার আগে সোরেন রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে আসেন। কিন্তু কেজরীওয়াল সেই পথে হাঁটেননি। তাঁর গ্রেফতারি পর থেকেই আম আদমি পার্টি (আপ) বার বার দাবি করে, জেল থেকেই সরকার চালাবেন কেজরীওয়াল।
৫০ দিন জেলে কাটানোর পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুক্রবারই জামিনে বাইরে এসেছেন কেজরীওয়াল। লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে তাঁর ২১ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে দেশের শীর্ষ আদালত। শনিবার সকাল থেকেই একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে মোদী এবং তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক বিষয় নিয়ে আক্রমণ করেছেন তিনি।
শনিবারের সাংবাদিক বৈঠকে কেজরীওয়াল মোদীকে নিশানা করে বলেন, ‘‘আপনি যদি গণতন্ত্রকে জেলে বন্দি করেন, তবে জেল থেকেই গণতন্ত্র চলবে। এমনকি, হেমন্ত সোরেনের পদত্যাগ করা উচিত হয়নি।’’ তার পরই কেজরীওয়াল ব্যাখ্যা করেন, কেন তিনি পদত্যাগ করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘পদত্যাগ না করে আমি জেল থেকে তানাশাহির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমি যখন জেলে ছিলাম, কিছু লোক প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন না? ৭৫ বছরের ইতিহাসে দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আপ। এই ফলাফল দেখে ওরা (বিজেপি) বুঝতে পেরেছিল আপকে হারানো যাবে না। তাই কেজরীওয়ালকে জেলে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। ভেবেছিল, সরকার পড়ে যাবে। কিন্তু আমরা সেই ফাঁদে পা দিইনি।’’
মোদীকে আক্রমণ করে কেজরী আরও বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, কিন্তু সব চোর তাঁর দলেই রয়েছে। কেজরীওয়ালকে গ্রেফতার করে তাঁরা বার্তা দিতে চেয়েছিলেন, তাঁরা যাঁকে ইচ্ছে তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে। বিজেপি সমস্ত বিরোধী নেতা-নেত্রীকে জেলে ভরে রাজনীতি খতম করে দেবে।’’
উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন কেজরীওয়াল। অন্য দিকে, গত ৩১ জানুয়ারি দুপুরে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতা হেমন্তের রাঁচীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। প্রায় সাত ঘণ্টা তল্লাশির পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে গ্রেফতারির আগে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। ইডি হেফাজত শেষে ঝাড়খণ্ডের জেলে বন্দি হেমন্ত। হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে জামিনের মামলা চলছে তাঁর। যদিও কোনও আদালতই এখনও পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জামিন মঞ্জুর করেনি।