অনন্ত মহারাজ। —ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক মঞ্চে থাকলেও ‘সন্তুষ্ট নন’ গ্রেটার নেতা তথা বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন্দ্র রায় তথা অনন্ত মহারাজ। শনিবার শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই মঞ্চের প্রথম সারিতে ছিলেন অনন্ত। সভায় বক্তব্যও রাখেন তিনি। রবিবার অনন্ত বলেন, “আমি বিজেপির সাংসদ। দলের নির্দেশিকা মেনে চলব। প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য আমন্ত্রণ করা হয়েছিল, আমি ছিলাম। কিন্তু মানুষের হয়ে ভোট তো আমি দিতে পারব না। মানুষ নিজের ভোট নিজেরাই দেবেন, মানুষ কী করবেন তাঁরাই বলতে পারবেন।”
উত্তরবঙ্গের মানুষ বিজেপির উপরে ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন বলে মনে করছেন মহারাজ। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য সে কথা মানতে চান না। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, উত্তরবঙ্গের মানুষ বিজেপির পক্ষেই রয়েছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, “মানুষ তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তাই এ বারও সর্বত্র বিজেপির ভাল ফল হবে। অনন্ত মহারাজের সঙ্গে শীঘ্রই আমরা দেখা করব।”
২ মার্চ বিজেপি প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। তার পরের দিন অনন্ত প্রকাশ্যেই দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা জানান। তিনি ওই দিন দাবি করেছিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে ফোনে জানিয়েছেন, কোচবিহার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হচ্ছে না। সেই বার্তা তিনি সবাইকে জানান। তা থেকে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপির প্রার্থী নির্বাচন নিয়েও তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি বলেও অভিযোগ অনন্তের। সাধারণ মানুষ চাইলে তিনি রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকেও পদত্যাগ করবেন বলেও জানান। তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। নিজের বক্তব্য জানিয়ে সেই সময়েই নয়াদিল্লিতে যান মহারাজ। কিন্তু তিনি সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। এরই মাঝে কাওয়াখালিতে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে অনন্তকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বিজেপির অন্দরের খবর, রাজবংশী সমাজের একটি অংশের মধ্যে অনন্ত মহারাজের প্রভাব রয়েছে। ওই ভোটব্যাঙ্ক নিজেদের দিকে টানতে মহারাজকে রাজ্যসভার সাংসদ করা হয়। সেই সময় অনন্ত বার বার দাবি করেছিলেন, কোচবিহার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তাঁকে জানানো হয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে খুশির খবর আসতে পারে বলেও তিনি প্রচার করেন। এই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির তরফে নতুন বার্তা পেয়ে ‘অখুশি’ অনন্ত।
তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিজেপির সম্পর্কে ধীরে ধীরে সবার ধারণা স্পষ্ট হচ্ছে। তার ফল ভোটে পড়বে।”