মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। —ফাইল চিত্র।
আসন্ন লোকসভা ভোটে রাজ্যে চারটি আসন তাদের লক্ষ্য, তার মধ্যে অন্যতম আসানসোল— এমনই দাবি মিম (অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন)-এর। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ২৮ শতাংশ পিছিয়ে পড়া ও সংখ্যালঘু শ্রেণি মিলিয়ে ২৮ শতাংশ ভোটের দিকে নজর রেখে তাঁরা লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্য কোর কমিটির সদস্য দানিশ আজিজ। সে জন্য সম্প্রতি খনি-শিল্পাঞ্চলে তাঁরা বেশ কিছু কর্মসূচিও হাতে নিয়েছেন। যদিও তৃণমূল, বিজেপি থেকে বাম— কেউই মিম-কে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
মিম সূত্রের দাবি, তফসিলি জাতি ও উপজাতি, অনগ্রসর শ্রেণি এবং সংখ্যালঘু ভোটের দিকে তাকিয়ে ভোট বৈতরণীতে নিজেদের জায়গা পাকা করতে চাইছে তারা। দলের এক নেতা জানান, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পশ্চিম বর্ধমানে মিম-এর পথ চলা শুরু হয়েছে। সে বছর রাজ্যে যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে তারা প্রার্থী দিয়েছিল, তার মধ্যে ছিল আসানসোল উত্তর কেন্দ্র। প্রার্থী হন তৃণমূল ছেড়ে মিম-এ যোগ দেওয়া নেতা দানিশ। পেয়েছিলেন ১৫১৪টি ভোট।
দানিশ জানান, ভোটের প্রচারে তাঁরা এলাকায় অবৈধ কয়লা, লোহা, বালি পাচার, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা খরচের বিষয়ে জোর দেবেন। তাঁর দাবি, জেলায় দলের সদস্য সংখ্যা ন’হাজারে পৌঁছলেও, সক্রিয় সদস্য পনেরোশোর কাছাকাছি। কারও সঙ্গে আঁতাঁত না করে তাঁরা নিজেরাই ভোটে লড়বেন বলেও তাঁর দাবি। দলের নেতা-কর্মীদের দাবি, ৫ ডিসেম্বর তাঁরা রাজ্যপালের কাছে কয়লা পাচার বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন। ১১ জানুয়ারি আসানসোল দক্ষিণ থানায় বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বালি পাচারের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করা হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের। তফসিলি জাতি-উপজাতি, অন্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণি থেকে সংখ্যালঘু, সকলে একই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে, এ কথা প্রচারে তুলে ধরাই লক্ষ্য বলে তাঁদের দাবি।
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন জেলায় মিম-এর কোনও প্রভাব নেই দাবি করে বলেন, ‘‘দানিশ আমাদের দলের ভাল নেতা ছিলেন। হয়তো কারও উপরে রাগ করে দল ছেড়েছেন। আমাদের বিশ্বাস, তিনি আবার ফিরবেন।’’ দানিশের পাল্টা দাবি, ‘‘দলের দুর্নীতিতে তৃণমূল কর্মীদের বড় অংশ ক্ষুব্ধ। তাই তৃণমূল ছেড়েছি। ওঁরা আগে নিজের দল ধরে রাখুন।’’ মিম সম্পর্কে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এ সব দল এখানে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না।’’ বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক শ্রীদীপ চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওরা তৃণমূলেরই সহযোগী দল। ওদের নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই।’’