Lok Sabha Election 2024

ঘাটালে প্রার্থী স্থগিত এআইসিসির, জোটের সঙ্গে দলেও জট, জেনে দিল্লি গেলেন কংগ্রেসের মির

সোমবার বিধান ভবনে বৈঠক শুরু হতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের নেতারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিজেপি নেত্রী পাপিয়া চক্রবর্তীকে প্রার্থী হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৪১
Share:

(বাঁ দিকে) কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মির। বিজেপি নেত্রী পাপিয়া চক্রবর্তী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বিক্ষোভের জেরে ঘাটালে প্রার্থী স্থগিত করে নিল কংগ্রেস। সোমবার বিধান ভবনে বিভিন্ন জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মির। সেখানেই একের পর এক জেলা নেতৃত্ব কংগ্রেস প্রার্থীদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিছু ক্ষেত্রে আবার জোটের কারণে আসন সিপিএমকে ছেড়ে দেওয়া নিয়েও ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় মিরকে। বৈঠক হাজির এক নেতার কথায়, ‘‘পর্যবেক্ষক মির খুব ধীরস্থির মানুষ। তিনি সকলের কথাই মন দিয়ে শুনেছেন। বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট নিয়ে যে দলের নেতা-কর্মীরা খুশি নন, তা যেমন বুঝেছেন, তেমনই বুঝেছেন, দলের অভ্যন্তরেও বিস্তর কোন্দল রয়েছে। ফিরে গিয়ে তিনি এআইসিসিতে এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।’’

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যায় এআইসিসি থেকে পশ্চিমবঙ্গের তিন লোকসভা আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। সেই ঘোষণায় দেখা যায়, ঘাটাল লোকসভায় কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন পাপিয়া চক্রবর্তী। সোমবার বিধান ভবনে বৈঠক শুরু হতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের তরফে নেতারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘‘বিজেপি নেত্রী পাপিয়া চক্রবর্তীকে প্রার্থী হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই প্রার্থীকে না সরানো হলে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ থেকে সরবেন না।’’ পর্যবেক্ষক মিরের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তাঁরা। পরে মিরই তাঁদের বৈঠক ডেকে পাঠান। তাঁরা লিখিত অভিযোগপত্রও দেন পর্যবেক্ষক মিরকে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ঘাটাল কেন্দ্রে প্রার্থী প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন তিনি। পরে সাংবাদিক বৈঠকে ঘাটালের প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেওয়ার কথাও ঘোষণাও করে দেন। সঙ্গে মির জানিয়ে দেন, ওই কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ঘাটাল কেন্দ্রে বামফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছেন সিপিআই নেতা তপন গঙ্গোপাধ্যায়। এ ক্ষেত্রে বাম-কংগ্রেস জোট কি ঘাটাল-সহ কয়েকটি আসনে হবে না? পুরুলিয়ায় ফরওয়ার্ড ব্লক ধীরেন মাহাতো ও কোচবিহারে নীতীশচন্দ্র রায়কে প্রার্থী করেছে। এমন কথা জানার পর মির বলেন, ‘‘যেখানে আমাদের জনভিত্তি এবং ভোট বেশি সেখানেই কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে। আবার যেখানে দেখা গিয়েছে জোট শরিকদের শক্তি বেশি সেখানে তাদের লড়াইয়ের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা শক্তি যাচাই করেই প্রার্থী দিয়েছি। তাই কেউ যদি মনে করে আমাদের থেকে তাদের শক্তি বেশি, এবং তারা প্রার্থী দেবেন। তাতে কিন্তু কংগ্রেস পিছিয়ে আসবে না।’’

Advertisement

এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস ১২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। আরও ৬-৮টি আসনে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রার্থী দেওয়ার পক্ষপাতী। সে ক্ষেত্রেও প্রার্থী হওয়ার দাবিদার রয়েছেন বেশ কয়েক জন। তাও বৈঠকে মিরকে জানানো হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতায় বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হয়েছেন শায়েরা শাহ হালিম। সিপিএম এই আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে মিরের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ প্রসাদ। পরে এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মির বলেন, ‘‘কারও ব্যক্তিগত ইচ্ছের জন্য কংগ্রেসকে প্রার্থী দিতে হবে এমন দল কংগ্রেস নয়। কংগ্রেস সংগঠনগত ভাবে যেখানে শক্তিশালী, সেখানেই প্রার্থী দেওয়া হবে। তা ছাড়া দক্ষিণ কলকাতায় একটি সমন্বয় কমিটিও রয়েছে। যেখানে দু’দলের নেতারা রয়েছেন। তাঁরাই সম্মিলিত ভাবে কাজ করবেন।’’

শুক্রবার ও শনিবার পর পর দু’দিন ধরে বসিরহাট, ব্যারাকপুর ও মথুরাপুরে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তাতেই ক্ষিপ্ত পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস। কারণ জোট আলোচনায় ব্যারাকপুর, বসিরহাট ও মথুরাপুর আসনে প্রার্থী দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল কংগ্রেস। এ ক্ষেত্রে জোট শরিকের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই প্রার্থী দেওয়ায় জোটে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে আলোচনা করেই রফাসূত্র বার করা হবে বলে জবাব দিয়েছেন মির। এক কথায় জোটের জট ছাড়াও যে দলের অভ্যন্তরেই অনেক দ্বন্দ্ব রয়েছে, তা বুঝেই দিল্লি গিয়েছেন বাংলা কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement