শুক্রবার এগরায় জনসংযোগে মেদিনীপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল (বাঁদিকে), এবং তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া। —নিজস্ব চিত্র।
রামনবমীর শোভাযাত্রা লক্ষ্য করে এগরা কলেজ মোড়ে দুষ্কৃতীদের ইট ও কাচের বোতল বৃষ্টির ঘটনার প্রতিবাদে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে থানায় দীর্ঘক্ষণ ধর্না এবং পথ অবরোধ করেছিলেন বিজেপি নেত্রী তথা মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। এর আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার এগরা বিধানসভা এলাকাতেই দিনভর ভোট প্রচারে করলেন অগ্নিমিত্রা। এবং একই দিনে একই জায়গায় প্রচার চালালেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া।
শোভাযাত্রায় হামলার ঘটনাকে কোনও ভাবেই যেন প্রতিদ্বন্দ্বী দল ভোটের ময়দানে নিজেদের পক্ষে অন্যতম তুরুপের তাস হিসাবে তুলে ধরতে না পারে সে ব্যাপারে বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়েই এখন বাড়তি সতর্ক বলে রাজনৈতিক মহলের মত। হামলা নিয়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে খানিকটা হলেও প্রচারে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। তাই সময় নষ্ট না করে বিষয়টি জনমনে টাটকা থাকতে-থাকতে দলীয় প্রার্থীকে দিয়ে এলাকায় প্রচার চালাতে চেয়েছে তারা। বুধবার থেকে এগরা শহরে বিজেপি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের ঝাঁঝও বাড়িয়েছে। আবার তৃণমূলও সময় নষ্ট না করে তাঁদের প্রার্থীকে একই দিনে ওই এলাকায় প্রচারে পাঠিয়েছে। লড়াইয়ে ময়দানে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ।
শুক্রবার সকালে এগরার প্রয়াত প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাসের বাসুদেবপুর অঞ্চল থেকে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের প্রচার কর্মসূচি শুরু হয়। সেখানে তিনি জনসংযোগ ও নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন। বাসুদেবপুর কালি মন্দিরে পুজো দেন। পরে খাগদা বাসুলি মন্দিরে প্রণাম ও জন সম্পর্ক অভিযান করেন। সেখান থেকে হুডখোলা জিপে কুলটিকরি ও পালিপারুল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জনসম্পর্ক কর্মসূচি শেষ করেন। বিকেলে দুবদা স্কুল বাজার, বেতা বাজারে গাড়িতে এবং পায়ে হেঁটে জনসংযোগ বিজেপি প্রার্থী। সন্ধ্যায় নস্করপুর হরিমন্দির বাজারে নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ‘চায়-পে চর্চা’ কর্মসূচিতে অংশ নেন অগ্নিমিত্রা।
অন্যদিকে, তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে এগরার দলীয় বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতির বুথ এলাকা পানিপারুল থেকে গাড়িতে জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করেন। বিকেলে পাঁচরোল ও বিজেপি পরিচালিত সাহারা ও জুমকি এলাকায় জনসংযোগ করেন তৃণমূল প্রার্থী। বুধবার যেখানে শোভাযাত্রায় হামলা হয় সেখানে এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ মিছিল করেন জুন। অথচ, বৃহস্পতিবার একই জায়গায় প্রতিবাদ মিছিল করতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। ফলে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে শাসক দলের হয়ে কাজ করা এবং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘এগরায় রামনবমীর শোভাযাত্রায় হামলার প্রতিবাদে মিছিল করতে বিজেপি সহ বিরোধী দলগুলিকে পুলিশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাধা দিয়েছে। আসলে পুলিশ-প্রশাসন এবং তৃণমূল, সবাই এক।’’ এগরা শহর তৃণমূলের সভাপতি উদয় শঙ্কর পালের আবার দাবি, ‘‘বিজেপি সব কিছুতেই মিথ্যাচার করে। মিছিল করতে বাহাত্তর ঘণ্টার আগে আবেদন করতে হয়। বিজেপি সেই নিয়মটুকু জানে না। আইন মেনে আমরা মিছিল করছি।’’