(বাঁ দিক থেকে) তৃণমূল বিধায়ক শাহিনা মমতাজ, অধীর চৌধুরী এবং হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
বহরমপুরের বিদায়ী সাংসদ তথা কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীকে ঘিরে তৃণমূলের বিক্ষোভের ঘটনার সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন ঘাসফুলেরই এক বিধায়ক। নওদার তৃণমূল বিধায়ক শাহিনা মমতাজ অধীরকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ আওয়াজ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘এটা অসভ্যতা এবং নোংরামি।’’ এ বার তৃণমূল আরও এক বিধায়ক ওই বিক্ষোভের সমালোচনা করলেন। তিনি ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তাঁর দাবি, অধীরকে ঘিরে যে তৃণমূল নেতা বা কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁরা বিক্ষিপ্ত ভাবে এ সব করছেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এমন কাজে অনুমোদন দেন না। পাশাপাশি, অধীর যেন বিক্ষোভের মুখে মেজাজ না হারান, সেই বার্তা দিয়েছেন হুমায়ুন।
বুধবার হুমায়ুন বলেন, ‘‘তৃণমূলের অফিশিয়ালি কোনও নির্দেশ নেই (বিক্ষোভের)। তাঁর (অধীরের) বিরুদ্ধে অবশ্যই আমাদের বক্তব্য আছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তাঁকে দেখে আমাদের ‘গো ব্যাক’ বলতে হবে।’’
শনিবার নওদা বিধানসভার দমদমা শ্যামনগর থেকে পায়ে হেঁটে প্রচার শুরু করেন অধীর। সেখানেই ব্লক সভাপতি শফিউজ্জামান ওরফে হাবিব মাস্টারের নেতৃত্বে অধীর চৌধুরীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয় বলে অভিযোগ। হাবিব মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী আবু তাহের খানের ভাগ্নে। অধীরের গাড়ি ঘিরে যখন বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল, পাল্টা স্লোগান তোলেন কংগ্রেসের কর্মীরা। উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। আগেও দু’বার প্রচারে বেরিয়ে একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন অধীর। শেষ বার বহরমপুরে প্রচারে বেরিয়ে বিক্ষোভ দেখে মেজাজও হারাতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস প্রার্থীকে। তৃণমূল অভিযোগ করে, তাদের এক কর্মীর গায়ে হাত তুলেছেন কংগ্রেস প্রার্থী। এ নিয়ে জোর তরজা হয়। এ নিয়ে নওদার তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘দলের এই বিক্ষোভ অসভ্যতামি ও নোংরামি। এটা আমি মেনে নিতেই পারি না। আমি সমর্থন করি না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি কখনও আমার ছেলেমেয়েদের (দলীয় কর্মী) বলব না এ ধরনের অন্যায় কাজ করতে। কারণ, উনি এক জন প্রার্থী, ওঁর অধিকার আছে প্রচার করার, প্রার্থী হিসাবে সবার এই অধিকার আছে।’’ প্রায় একই কথা বলছেন তৃণমূলের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনও। তিনি বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরীর সঙ্গে অনেকটা সময় অতিবাহিত করেছি। কিন্তু কেন জানি না, অধীরবাবু এ বার ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে মেজাজ হারাচ্ছেন!’’
এর পরেই দলের একাংশকে কটাক্ষ করেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন। কংগ্রেস প্রার্থী অধীরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তাঁর (অধীর) স্বাধীনতা আছে ভোটের প্রচারে যাওয়ার। প্রত্যেক প্রার্থীর সেই স্বাধীনতা আছে। তৃণমূলের ইউসুফ পাঠানের যেমন ওই স্বাধীনতা রয়েছে, অধীর চৌধুরীরও আছে। আর তৃণমূলের যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, সেটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা। কিছু ছেলে অধীরবাবুকে ‘গো ব্যাক’ বলছেন। উনি তাঁদের এড়িয়ে চলে যেতে পারতেন। কিন্তু উনি গাড়ি থেকে নেমে পড়ছেন।’’ পাশাপাশি, হুমায়ুন জানিয়েছেন, যে কাজ তাঁর দলের কর্মীদের একাংশ করেছেন, তা মোটেই সমীচীন নয়।